গণবাণী ডট কম:
বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন তিনি। এটি পাস হবে ৩০ জুন। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
প্রস্তাবিত বাজেট চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ১৩.২% বেশি। টাকার অংকে এই পার্থক্য ৬৬ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। করোনাভাইরাসের বিপর্যয় মোকাবিলায় এবারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়। কৃষি খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয় ২২ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাবদ ৯৫ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে । বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতে সেইসঙ্গে পল্লি উন্নয়ন ও স্থানীয় সরকার উন্নয়নে আগের চাইতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে যে জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যাদের কর্মসংস্থান ঝুঁকির মুখে পড়েছে অথবা যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের সবার সুরক্ষার বিষয়টি এবারের বাজেটে বিবেচনা করা হয়েছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের ঘাটতির চেয়ে ৩৬ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা বেশি। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে এই ঘাটতি মেটানো হবে বলে বাজেট অধিবেশনে জানানো হয়।
যেসব পণ্যের দাম কমবে :
দাম কমতে পারে
এলপিজি সিলিন্ডার।
স্বর্ণ।
স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়পার।
চামড়া বা যেকোন উপাদানে তৈরি জুতো।
সরিষার তেল।
চিনি।
আলু ও ভুট্টা থেকে স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত খাবার।
করোনাভাইরাস টেস্ট কিট, মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই, সুরক্ষা চশমা, ওষুধ এবং আইসিইউ যন্ত্রপাতি।
পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পের কাঁচামাল।
রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশনারের কম্প্রেসার।
ডিটারজেন্ট।
সৌর ব্যাটারি।
প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং।
পলিস্টার, রেয়ন, কটন ও অন্যান্য সিনথেটিক সুতা।
আমদানি করা কৃষিযন্ত্র ও যন্ত্রাংশ।
মৎস্যশিল্পে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি।
কাগজ।
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী, সার, বীজ, কীটনাশক জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, কাঁচা তুলোসহ আরও কয়েকটি শিল্পের কাঁচামালের দাম অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দ্বিতীয় বাজেট এটি। ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’ শিরোনামে এবারের বাজেট বর্তমান অর্থমন্ত্রীরও দ্বিতীয় বাজেট।
স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ১৯৭২ সালে তাজউদ্দীন আহমদ ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। কালের পরিক্রমায় এবার বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। এই ৪৯ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। সেইসাথে নিজস্ব অর্থের ব্যবহারে সক্ষমতাও বেড়েছে। কিন্তু সারা বিশ্বকে থামিয়ে দেওয়া করোনা ভাইরাসের এক ব্যতিক্রমী প্রেক্ষাপটে এবার বাজেট উপস্থাপন হলো।