গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার টেপিরবাড়ি এলাকায় এএসএম কেমিক্যাল নামের রাসায়নিক পণ্য তৈরির একটি কারখানায় বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট প্রায় ৩ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে ডাম্পিং করার সময় রাত ১১টার দিকে কারখানার ভিতর একজনের মরদেহ পাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহ উদ্ধারের পর তা শ্রীপুর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে।
আগুন লাগার পর কারখানা থেকে বেরিয়ে আসার সময় কারখানার কর্মকর্তাসহ অন্তত ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯ জনকে ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে গাজীপুরের জয়দেবপুর, টঙ্গী ও ময়মনসিংহের ভালুকা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে আরো ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত সাড়ে সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
কারখানায় কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী জানায়, কারখানায় উৎপাদন চলাকালে বিকেল প্রায় সাড়ে চারটার দিকে কেমিক্যাল প্ল্যান্টের বয়লার কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে মুহূর্তে আগুন প্ল্যান্ট জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কারখানার ভেতর রাসায়নিক পদার্থের অনেক ড্রাম ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, আগুন লাগার পর নিরাপদে বেরিয়ে আসার সময় হুড়োহুড়ি কিংবা লাফিয়ে পড়ে কর্মকর্তাসহ ১৫ জন শ্রমিক আহত হন। তাঁদের মধ্যে কারখানার সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, কর্মকর্তা মো. টুটুল, ওয়াসিম আকরাম, আবির হোসেন, ইসহাক, সুজাউদ্দিন, সিলভেস্টা, আশরাফুল, মনির হোসেনকে জনকে ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে আহতদের মধ্যে কেউ দগ্ধ নন।
স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন জানান, আগুন লাগার পর কারখানা ঘেঁষা প্রায় ৫০টি বসতঘর ঝুঁকিতে পড়ে। সেখানেও আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কায় ঘরের মালসহ নিরাপদে সরে যায় বাসিন্দারা।
কারখানাটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আসিফুর রহমান দাবি করেন, আগুনে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হামিদ মিয়া জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রনের কাজ শুরু করে। সাড়ে সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে একজন নিহত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।
এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। এছাড়া নিহতের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হবে।