গণবাণী ডটকম:
লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ২০ বছরের তরুণের দেহে সফল অস্ত্রোপচারে প্রথমবারের মতো যকৃৎ প্রতিস্থাপনে সফলতা পেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ভারতের বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় ১৮ ঘণ্টার এই অস্ত্রোপচার শুরু হয় গত সোমবার ভোর ৬টায় এবং শেষ হয় মধ্যরাতে।
এরপর মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে সফলতার ঘোষণা দেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। চিকিৎসকদের একটি ‘জটিল’ অস্ত্রোপচারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, লিভার সিরোসিসে ওই তরুণের যকৃতের কোষগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
“এই লিভার প্রতিস্থাপনে তরুণের মা নিজের যকৃতের অংশ সন্তানকে দেন।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অস্ত্রোপচার বিনা খরচে করে দিয়েছে বলেও জানান কনক কান্তি বড়ুয়া।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে এই লিভার প্রতিস্থাপনকে ‘যুগান্তকারী’ সফলতা বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
হেপাটোবিলিয়ারি ও প্যানক্রিয়াটিক, লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুলফিকার রহমান খান বলেন, “রোগী ও দাতা দুজনেই সুস্থ আছেন।” এই অস্ত্রোপচারে চিকিৎসকদের নেতৃত্ব দেওয়া জুলফিকার খান বলেন, রোগী ও লিভার দাতা উভয়কেই সাত দিনের জন্য নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। লিভার প্রতিস্থাপনে বাংলাদেশি চিকিৎসক দলের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন ভারতের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন ডা. বালাচন্দ্র মেননসহ তার চিকিৎসক দল।
বাংলাদেশে এর আগে ২০১০ সালে বারডেম হাসপাতাল দেশে প্রথম লিভার প্রতিস্থাপন করে। তবে এরপর তারা এই উদ্যোগ চালু রাখতে পারেনি। পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে ২০ লাখ টাকাতে দেশেই এই চিকিৎসা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি। “আর এই খরচ বিদেশ থেকে তিন-চার গুণ কম।”
দেশে কত সংখ্যক রোগীর লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি, তা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পরিসংখ্যান না থাকলেও সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, প্রতি বছর প্রায় ৫০০ রোগী বিদেশে গিয়ে লিভার প্রতিস্থাপনের চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।