গণবাণী ডট কম:
কারো ৩ মাস কারো ৭ মাসের বকেয়া বেতন ও হাজিরা বোনাসের টাকা পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পরে উত্তেজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সকালে প্রায় আধঘন্টা ঢাকা-জয়দেবপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর লক্ষীপুরা এলাকার স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড নামের পোশাক কারখানায় স্টাফসহ প্রায় চার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। গত কয়েক বছর ধরেই কারখানার মালিকপক্ষ কয়েক মাসের বেতন আটকে রাখেন। এভাবে তাদের আট মাসের বেতন বকেয়া হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রতি মাসেই বেতনের সময়ে আন্দোলন করতে হয়। গত ঈদ উল ফিতরের আগেও টানা দুইদিন আন্দোলন করে শ্রমিকদের জেলা প্রশাসন ও সিটি মেয়রের মাধ্যমে বেতন আদায় করে নিতে হয়েছে। কিন্তু বকেয়া থাকে কারখানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা। এ জন্য গত মে মাসেও আন্দোলন করা হয়। এ সময় কারখানার মালিক পক্ষ বেতন পরিশোধের জন্য একাধিক তারিখ দিয়েও কথা অনুযায়ী বেতন দিতে পারেননি। এখন পর্যন্ত সেই বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে বেতনের দাবি জানালে কারখানা কর্তৃপক্ষ ফের টালবাহানা শুরু করে। এসময় শ্রমিক ও কর্মকর্তা ও কর্মচারী (স্টাফরা) কাজ বন্ধ করে সকাল ৯টায় কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর তারা কারখানা সামনে জয়দেবপুর-ঢাকা সড়কে অবস্থান নিয়ে বাঁশ দিয়ে বেরিকেড দিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) জাকির হাসান জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেন। কিছুক্ষণ পরে প্রথমে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরে কিছু শ্রমিক তাদের বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে ঢাকা-জয়দেবপুর মহাসড়কে এসে অবস্থান নেন। এসময় তারা সড়কে বাশের বেড়া দিয়ে কিছু বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের পুনরায় কারখানার ভিতরে সরিয়ে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী জানান, কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া বেতন গত ঈদের আগে পরিশোধ করা হয়েছিল। এখন কারখানার বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা ৭৩৫ জনের কারো ৩ মাস কারো ৭ মাস বেতন বকেয়া রয়েছে। তাদের বেতন দেয়ার জন্য মালিক পক্ষ একাধিকবার তারিখ দিয়েও তা পরিশোধ করতে পারেন নি। তাদের বকেয়া বেতনের দাবীতে প্রথমে কারখানার ভিতরে ও পরে কর্মচারী ও শ্রমিকরা কারখানার বাইরে এসে সড়কে অবস্থান নেয়। পরে তাদের বুঝিয়ে কারখানার ভিতরে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন মালিক পক্ষ ১৫ জুলাই আগের দুই মাসের এবং ১৮ তারিখ চলতি মাসের বেতন দিবে, কিন্তু শ্রমিকরা মানছেন না। এ নিয়ে আলোচনা চলছে।