গণবাণী ডট কম:
পূর্ব-শক্রতার জের ধরে ভাড়া করা খুনিকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে চলন্ত বাসের মধ্যে খুন করা হয় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কনস্টেবল শরীফ আহমেদকে (৩৫)। পরে লাশ ঢাকা ময়মনসংহ মহাসড়কের পাশে ফেলে দেওয়া হয়। রবিবার বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যা ব-১ এসব তথ্য জানায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র্যা ব-১ এর সদস্যরা শরীফ হত্যায় জড়িত হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে হত্যার করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা চাকু এবং রক্তমাখা বাস জব্দ করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার মোজাহাদী গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন (২৮), একই এলাকার মাসুদ মিয়া (২৫) এবং নেত্রকোনার কমলাকান্দা থানার দরিয়াকোনা গ্রামের মনির হোসেন (৩০)।
মোফাজ্জল গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এবং মনির হোসেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নাওজোড় এলাকায় বসবাস করেন। মনির গাজীপুরে চলাচলকারী তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসের চালক।
গত ৪ মার্চ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ন্যাশনাল পার্কের সামনে ঢাকা-ময়ময়সিংহ মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ায় ৮ মার্চ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূর্বচান্দনা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দাফনের ৪ দিনপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তার পরিচয় উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে। তিনি হলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সদস্য মো. শরীফ আহাম্মেদ (৩৩)। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ঝিলকি এলাকার মো. আলাউদ্দিন ফকিরের ছেলে।তার বাবা আলাউদ্দিন হোসেনও পুলিশের সদস্য। আদালতের নির্দেশে কবর থেকে শরীফের লাশ উত্তোলন করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনার পর র্যা ব-১ তাৎক্ষণিভাবে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার বিবরণ দিয়ে র্যা ব জানায়, পুলিশ কনস্টেবল শরীফের সঙ্গে মোফাজ্জল ও মনিরের পূর্ব পরিচয় ছিল। কিছু দিন পূর্বে শরীফের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব হয়। দ্বন্দ্বের জেরে শরীফকে মোফাজ্জল এবং মনির হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শরীফকে খুন করার জন্য মোফাজ্জল ভাড়াটে খুনি মাসুদকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করে এবং অগ্রিম ৫ হাজার টাকা দেয়। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোফাজ্জল কৌশলে শরীফকে ভোগড়া বাইপাস এলাকায় নিয়ে আসার পর তাকে তাকওয়া পরিবহণের একটি বাসে উঠায়। পরে চালক মনির হোসেন বাসটি চালিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড ধরে শ্রীপুরের মাওনার উদ্দেশে রওনা হয় এবং ভবানীপুরবাজার থেকে ইউটার্ন নিয়ে পুনরায় চান্দনা চৌরাস্তার দিকে যেতে থাকে। চলন্ত বাস রাত দেড়টার দিকে গাজীপুরের হোতাপাড়া আসার পর মাসুদ বাসের লোহার হুইল রেঞ্জ দিয়ে পিছন থেকে শরীফের মাথায় পর পর আঘাত করে। শরীফ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে মাসুদ চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
শরীফের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা তিনজনে ভাগাভাগি করে নেয়। রাত ২টার দিকে ন্যাশনাল পার্কের সামনে লাশ সড়কের পাশে ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায় তারা।