গণবাণী ডট কম:
প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইতালি থেকে দেশে আসার পর গাজীপুরের কাপাসিয়ায় একটি কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার পর ৭ প্রবাসীকে আজ মঙ্গলবার সকালে বাড়ী পৌছে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা শেষে তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি না থাকায় তাদের ছাড়পত্র দিয়ে আলাদা গাড়ীর মাধ্যমে কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের বাড়ী পৌছানোর ব্যবস্থা করে।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সালাম জানান, গত ১৪ মার্চ রাতে ইতালি প্রবাসী ৪৪ জন বাংলাদেশী গত ১৪ মার্চ রাতে দেশে ফেরেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিআরটিসি বাস যোগে রাতেই তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল এলাকায় মেঘডুবি ২০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। কিন্তু পরে শরীরে তাপমাত্রা থাকায় ১৫ মার্চ ৪ জনকে এবং ১৬ মার্চ দুই দফায় ৮ জনকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখানে একজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তাকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রেখে বাকী ৭ জনকে ১৮ মার্চ রাতে আলাদাভাবে পুনরায় আরো ১৪দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য পাঠানো হয় গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পাবুর মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে। তাপর থেকে ৭ জন এখানেই কোয়ারেন্টেইনে ছিলেন।
সরকারের নির্দেশে প্রবাসীদের পৌছানোর আগেই ওই কেন্দ্রটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে প্রস্তুত করে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। রাজধানীর বাইরে জেলা পর্যায়ে একমাত্র গাজীপুরেই দুটি স্থানে প্রাতিষ্ঠানিক কোরায়েন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়। পাবুর কেন্দ্রে প্রবাসীদের থাকার সকল ব্যবস্থা, তাদের পোশাক, তিন বেলা খাবারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিসপত্র সরবরাহের খরচ কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ যৌথভাবে বহন করেছে। মঙ্গলবার তাদের কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা শেষ হওয়ায় এবং তাদের শরীরে করোনার উপস্থিত না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
ডা: আব্দুস সালাম আরো জানান, এখানে শরীতপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্রা ও নরসিদী জেলার একজন করে এবং ঢাকার ৩ জন প্রবাসী কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমির নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অর্থায়নে আলাদাভাবে এই ৭ প্রবাসীকে নিজ নিজ বাড়ীতে পৌছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান এ কেন্দ্রে স্থানীয় আরো দুজন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এদের গাজীপুরের শ্রীপুরের একজন ছবি তোলার সময় প্রাবসীদে সংস্পর্শে গিয়েছিলেন। অপরজন কাপাসিয়া উপজেলার আমরাইদ এলাকার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফেরার পর স্বজনরা তাকে বাড়ীতে রাখতে রাজি না হওয়ায় এখানে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তাদের আগামী ৪ এপ্রিল ছেড়ে দেয়া হবে।
প্রবাসীদের বিদায় জানানোর সময় কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট আমানত হোসেন খান, কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা: ইসমত আরা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুস সালাম, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন।