গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ পজিটিভদের চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কার্যক্রম শুর হবে। ইতিমধ্যে এই হাসপাতালে ৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এসব তথ্য জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক ডা: মো. খলিলুর রহমান।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো. খলিলুর রহমান জানান, গত ১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পর শুক্রবার থেকেই আমরা প্রস্তুতির কাজ শুরু করি। ইতিমধ্যে এই হাসপাতালকে ডেডিকেটেড হাসপাতালে রুপান্তরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখানে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ১০০শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ হাসপাতালে চারটি ভেন্টিলেটর ছাড়াও ১০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের আবাসন ব্যবস্থা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরেই করা হয়েছে। এখানেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য সহায়ক জনবল আলাদা দলে বিভক্ত হয়ে একেক দল টানা ৭দিন চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে। পরে তারা ৭ দিন হাসপাতালের ভিতরে থাকবে। তারপর আরো ১৪ দিন হাসপাতালের বাইরে কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপর তারা আবার চিকিৎসা দিবে। উক্ত সময় অন্য একটি চিকিৎসকদল ও অন্যরা চিকিৎসা সেবা দিবেন। এভাবে পুরো প্রক্রিয়া সাজানো হয়েছে। যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে চিকিৎসা দেয়া যায় এবং চিকিৎসক ও অন্যান্য সকলের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক তপন কান্তি সরকার সাংবাদিকদের জানান, এখানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পজেটিভ রোগীদের ভর্তি করা হবে। তাদের ফলো-আপ চিকিৎসার জন্য নমুনা পরীক্ষা করা হবে ঢাকার আইইডিসিআর-এ। যাদের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি, কিন্তু করোনা সংক্রমণ পজেটিভ, তারা বাসায় আইসোলেশনে থেকেও টেলিকমিউনিকেশনের মাধ্যমে এ হাসপাতালে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য পরামর্শ নিতে পারবেন। এখানে শুধু কোভিড-১৯ রোগীদের সিমটোমিক চিকিৎসা দেয়া হবে। যেমন- শ্বাসকষ্ট, কাঁশি, জ্বর, ব্যথার মত রোগের চিকিৎসা দেয়া হবে। করোনা লক্ষণ নিয়ে আসা রোগীদের নমুনা সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে অন্যত্র পরীক্ষা করা হবে। এখানে নমুনা পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই।
তিনি আরো জানান, এখানে আউটডোর তথা জরুরী বিভাগে এখন আর সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে না। ইতোপূর্বে এ হাসাপাতালে যে সকল সাধারণ রোগী ভর্তি ছিলেন তাদের মধ্যে কিছু রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে এবং গুরুতর অসুস্থদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হসপিটাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ সচিব মো: মারুফুর রশিদ খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়।