গণবাণী ডট কম:
বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের চার মাসের কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। একক দেশ হিসেবে করোনাভাইরাস সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পুরো বিশ্বে যত মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে ৩০ শতাংশ। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় ১৯ লাখ।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেবে অনুযায়ী দেশটিতে এখন মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ২৭৬ জন।
গত ২১ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। বিশ্বজুড়ে এখনো পর্যন্ত ৫৬ লাখ মানুষ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছে প্রায় তিন লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ পর্যন্ত ৪৪ বছর যুদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ওই সকল যুদ্ধের চেয়ে শুধু করোনাতেই মাত্র চার মাসের মধ্যেই বিশ্বের শক্তিশালী দেশটিতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সালে হওয়া কোরিয়া যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে ৩৬ হাজার সেনা মারা যান। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত হওয়া ভিয়েতনামের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮ হাজার সেনা মারা যান। ২০০৩ থেকে ২০১১ পর্যন্ত হওয়া ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া ৪ হাজার সেনা মারা যান। ২০০১ থেকে শুরু হওয়া আফগানিস্তান যুদ্ধে মারা গেছেন ২ হাজার মার্কিন সেনা। আর এ সব যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বমোট মারা গেছেন ১ লাখ ৫শ সেনা।
আমেরিকার ২০টি অঙ্গরাজ্যে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এসব অঙ্গরাজ্য হচ্ছে - নর্থ ক্যারোলাইনা, উইসকনসিন এবং আরকানসাস।
শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলস এবং ওয়াশিংটনের মতো শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনো বেশি। তবে নিউইয়র্ক শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। সেখানে এখন মৃত্যুর হার কমে এসেছে। নিউইয়র্কে এখনো পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন। কিন্তু মি. ট্রাম্প পাল্টা দাবি করেন, তার প্রশাসন যদি পদক্ষেপ না নিতো তাহলে মৃতের সংখ্যা এখনকার চেয়ে ২৫ গুণ বেশি হতে পারতো।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে মি: ট্রাম্প বিষয়টিকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করেন। তিনি একটি মৌসুমি ফ্লু হিসেবে বর্ণনা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে আগে পদক্ষেপ নিলে মৃতের সংখ্যা ৩৬ হাজারের কম হতে পারতো।