গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (অঞ্চল-৭) নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনকে (৫০) হত্যার প্রতিবাদ ও দ্রুত বিচারের দাবিতে আগামী ২ জুন সারাদেশের প্রকৌশলীরা কালো ব্যাচ ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)।
এছাড়া নিহত প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনের দুই সন্তানের লেখাপড়া নিবিগ্নে চালিয়ে নিতে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে প্রতিজনকে বৃত্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শনিবার (৩০ মে) অনলাইনে আইইবি’র ৬৯৬ তম নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় আইইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদের সঞ্চালনায় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর পক্ষ থেকে নিহত প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনের দুই সন্তানের লেখাপড়া নিবিগ্নে চালিয়ে নিতে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে প্রতিজনকে বৃত্তি দেয়া হবে। প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনেকে হত্যার প্রতিবাদ হিসেবে সারাদেশে আইইবি’র কেন্দ্র, উপ-কেন্দ্রসহ
প্রকৌশল সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রকৌশলীগণ আগামী ২ জুন রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মস্থলে কালো ব্যাচ ধারণ করবেন। এছাড়া আইইবি’র সকল কেন্দ্র, উপকেন্দ্রসসহ সকল প্রকৌশলী সংস্থার সামনে প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনের হত্যার দ্রুত বিচার চেয়ে ব্যানার টানানো হবে।
এর আগে আইইবি’র ৬৯৪ তম নির্বাহী কমিটির সভায় এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচার দাবি জানিয়েছিল আইইবি’র নির্বাহী কমিটির সদস্যরা। পরে আইইবি’র ৬৯৫ তম নির্বাহী কমিটির সভায় প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনকে হত্যার অধিকতর তদন্তের দাবি জানিয়েছিল। পরে ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ সংশ্লিষ্ট দফতর গুলোতে চিঠি দেয় আইইবি।
এছাড়া, প্রকৌশলী দেলোয়ার হত্যার বিচার দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও প্রকৗশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
দেলোয়ার হোসেন হত্যাকাণ্ডের ‘দায় স্বীকার করে’ আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তার সহকর্মী সহকারী প্রকৌশলী আনিসুর রহমান সেলিম। গত ১৫ মে গাড়ি চালক হাবিব ও হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া শাহীন (ভাড়াটে খুনি) ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
প্রসঙ্গত, প্রকৌশলী দেলোয়ার মিরপুরের বাসা থেকে গত ১১ মে সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গাজীপুরের সিটির কর্মস্থলের রওনা হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। বিকেল চারটার দিকে উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম দিকের ৮ রোডের পাশের একটি জঙ্গল থেকে প্রকৌশলী দেলোয়ারের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী খোদেজা আক্তার তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী সেলিম হোসেন, গাড়িচালক হাবিব ও ভাড়াটে খুনি শাহিন হাওলাদারকে গ্রেফতার করে।