গণবাণী ডট কম:
১০ বছর আগে চালু হওয়া অনলাইন পদ্ধতির জিডিতে কয়েক লাখ জিডি (সাধারণ ডায়েরি) হয়েছে। জিডিগুলো পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে দেখতে পায় এর অর্ধেকই ভুয়া। মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনলাইনে জিডি করা হয়েছে। অনলাইনে জিডি দায়েরের পর সেই কপি আবার সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়ে যেতে হয় সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তার সিল স্বাক্ষর নিতে। এ ক্ষেত্রে জিডিকারী ব্যক্তি অনেক ক্ষেত্রে থানায় যান না। পরে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার জিডিটি থানায় নথিভুক্ত করে দিতেন। এভাবে অনলাইনে অনেক ভুয়া জিডি করা হয়। এ কারণে সম্প্রতি অনলাইনে জিডি করার ক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড ব্যবহার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।
সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হলো অপরাধ ও অন্যান্য সংবাদবিষয়ক রেজিস্টার। থানায় জিডি করা হলে তা যদি কোনো আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটন বিষয়ে হয় তবে থানা কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমলে নিয়ে অপরাধটি প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৭ (বি) ধারায় বলা হয়েছে, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে, সাধারণ ডায়েরিটি তদন্তের জন্য যথাযোগ্য নয়, তাহলে তিনি তদন্তের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন না। আইনগত সহায়তা লাভের জন্য জিডি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেবল একটি জিডির ভিত্তিতেই একটি মামলার শুরু হতে পারে। তাই জিডির আইনগত গুরুত্ব অনেক।
পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে অনলাইনে জিডি করা হলে, ভুয়া জিডি দায়েরের ঘটনা বন্ধ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে রাজধানীর কয়েকটি থানায় চালু করা হয়েছে। এটি সফল হলে সারা দেশের থানায় এই কার্যক্রম চালু হবে।
রাজধানীর কলাবাগান থানায় পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনলাইনে জিডি দায়ের করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রম সফল হলে অন্যান্য থানায় চালু করা হবে। এ ব্যাপারে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আব্দুল্লাহ হেল কাফী বলেন, স্মার্টকার্ডের নম্বর দিয়ে অনলাইনে জিডি দায়ের করতে হয়। এ ক্ষেত্রে জিডি দায়েরকারী ব্যক্তির মোবাইল নম্বরে একটি পিনকোড নম্বর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসএমএসের মাধ্যমে চলে যায়। ওই পিনকোডটি ওই ব্যক্তির জন্য সারাজীবনের জন্য নির্ধারিত করা থাকবে। ভবিষ্যতে তিনি যদি আরো জিডি করেন, সে ক্ষেত্রে ওই পিনকোড দিয়ে তাকে অনলাইনে ঢুকে জিডি দায়ের করতে হবে।
ধানমন্ডি থানার ওসি হুমায়ন কবির বলেন, অনলাইন জিডি খুব একটা বেশি হয় না। তবে যা হয় তার বেশির ভাগ হলো ভোটার আইডি কার্ড, পরীক্ষার সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোবাইল ফোনসেট ও অন্যান্য কাগজপত্র হারানোর জিডি। তবে কিছু ক্ষেত্রে ভুয়া জিডির ঘটনাও ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে জিডি করা হলে ভুয়া জিডি দায়েরের ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুনুর রশিদ বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনলাইনে জিডি করা হলে অনেক ভুয়া জিডি দায়েরের ঘটনা কমে যাবে। অনেকেই তখন ইচ্ছামতো জিডি করতে পারবেন না।