গণবাণী ডট কম:
সাংবাদিক ও কথাশিল্পী রাহাত খান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি….রাজিউন)। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় তিনি তাঁর রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে নিজ বাসায় মারা। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগে ভুগছিলেন।
বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে তাঁর মরদেহ রাখা হয়েছে।শনিবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রয়াতের শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত এই সাংবাদিক এবং লেখকের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন।তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
রাহাত খান ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামের খান পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে রাহাত খান কিছুদিন জোট পারচেজ ও বীমা কোম্পানিতে চাকরি করে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে যোগদান করেন। তারপর একে একে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেছেন তিনি।
১৯৬৯ সালে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার সাংবাদিকতা জীবনের হাতেখড়ি। পরে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগদান করেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালে তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দৈনিক বর্তমান পত্রিকা। বর্তমানে তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
রাহাত খান ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।
কথা সাহিত্যিক হিসাবে তার পরিচিতি বা যশ অনেক বেশি। রাহাত খান ছোট গল্প এবং সাহিত্যের এই দুই শাখায় অবদান রেখেছেন। ১৯৭২ সালে অনিশ্চিত লোকালয় নামে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ প্রকাশ হয়। তাঁর লেখা এক প্রিয় দর্শিনী, মন্ত্রীসভার পতন, হে শূণ্যতা উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। তিনি সাহিত্য নিয়েই বাংলা একেডেমি পুরস্কার এবং একুশ পদক পেয়েছেন।
এই রাহাত খানের নামেই তাঁর বন্ধু আরেকজন লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন মাসুদ রানা সিরিজে একটি চরিত্র তৈরি করেছিলেন।
ইতিমধ্যে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৩), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫), সুফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার (১৯৭৯), আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২), ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় একুশে পদক (১৯৯৬) পেয়েছেন।