গণবাণী ডট কম:
রাজধানী ঢাকায় নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিমকে মারধরের ঘটনায় হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় মারধর ও হত্যা চেষ্টা’ মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলায় আসামীদের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ইরফান সেলিমের নাম, তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ঢাকা ৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে।
ধানমন্ডি থানার তদন্ত কর্মকর্তা আশফাক রাজীব হাসান জানিয়েছেন, মামলার এজাহারে আসামীদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে পথরোধ করে সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর, জখম ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা আসামীদের মধ্যে ইরফান সেলিম ছাড়াও এবি সিদ্দিক দিপু, মোহাম্মদ জাহিদ এবং গাড়ি চালক মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করা আছে। এছাড়া ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা আসামীর কথাও বলা আছে।
কী ঘটেছিল:
পুলিশ জানায়, রবিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির কলাবাগান ক্রসিংয়ে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়েছিল ‘সংসদ সদস্য’ স্টিকার লাগানো হাজী সেলিমের গাড়ি। এরপর নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তা মোটরসাইকেল থামান এবং নিজের পরিচয় দেন। এসময় হাজী সেলিমের গাড়ী থেকে দুই জন ব্যক্তি নেমে এসে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিমকে মারধর করে। একপর্যায়ে ওই কর্মকর্তা আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে লোকজন জমে গেলে সংসদ সদস্যের গাড়ি ফেলে মারধরকারীরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে গাড়ি ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্র মতে, ঘটনার সময় সাংসদ হাজী সেলিম গাড়িতে ছিলেন না। তার ছেলে ইরফান ও নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, এ ঘটনায় মারধর ও হত্যা চেষ্টা’ মামলা করা হয়েছে । ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গাড়ি ও মোটরসাইকেল থানায় আছে।
খবরে বলা হচ্ছে, তিনি সস্ত্রীক মোটর সাইকেলযোগে ফিরছিলেন। এসময় একটি গাড়ির সঙ্গে মোটর সাইকেলটির ধাক্কা লাগার পর গাড়িটি থেকে অভিযুক্তরা নেমে এসে ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন।
এমনকি তিনি নিজের পরিচয় দেয়ার পরও অভিযুক্তরা মারধর অব্যহত রেখেছে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে এরইমধ্যে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি তার উপর হওয়া হামলার বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, তাকে বিনা কারণে একতরফাভাবে আঘাতের পর আঘাত করা হয়। এতে তার একটি দাঁতও ভেঙ্গে যায়। তার স্ত্রীর গায়েও হাত তোলা হয়েছে বলে ভিডিওতে তিনি দাবি করেন। এই ভিডিওটি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
তবে বাংলাদেশের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে ভিডিওর এই ব্যক্তিকে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম আহমদ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ইরফান সেলিমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
হাজী সেলিমের মোবাইলে যোগাযোগ করা পর সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অপর প্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেয়া হয়। পরে তার নম্বরে এসএমএস পাঠানো হলেও কোন ফিরতি জবাব আসেনি। খবর : বিবিসি ও অন্যান্য।