গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী এলাকার চাঞ্চল্যকর পুলিশের সোর্স জাকির হোসেন (৬০) হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ বিল্লাল হোসেনসহ ২ জনকে আজ বিকালে গ্রেফতার করেছে র্যা ব-১। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মোঃ বিল্লাল হোসেন (২৭) কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানার নীলগঞ্জ গ্রামের শুকুরে আলীর ছেলে। তিনি উক্ত হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ১ নং আসামী। অপর আসামী মোছাঃ ঝর্ণা আক্তার (২১)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকার মরকুন পশ্চিম পাড়ার মো: নুরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি উক্ত হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ও হুকুমদাতা এবং মামলার এজাহারনামীয় ৩ নং আসামী।
বৃহস্পতিবার বিকালে র্যা পিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব) এর অধিনায়কের পক্ষে সহকারী পুলিশ সুপার ও কোম্পানী কমান্ডার, সিপিসি-২ মোঃ মোর্শেদুল হাসানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গত ২৬ জানুয়ারি দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন পশ্চিম পাড়া এলাকায় কতিপয় দুর্বৃত্তরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পুলিশের সোর্স মোঃ জাকির হোসেন (৬০) এর দুই পায়ের উরু এবং শরীরের একাধিক স্থানে এলোপাতাড়ি ধারালো ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে জিএমপি এর টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। এ হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে র্যা ব-১ তাৎক্ষনিকভাবে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার ২৮ জানুয়ারি বিকালে র্যা ব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন শিলমুন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত মামলার আসামী মোঃ বিল্লাল হোসেন এবং হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ও হুকুমদাতা মামলার আসামী মোছাঃ ঝর্ণা আক্তার (২১) কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ধৃত আসামীদের নিকট হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১ টি চাকু (সুইচ গিয়ার), ০২ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ধৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করে।
ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা সকলে এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী/সন্ত্রাসী। ইতিপূর্বে মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও জোড়া খুনের অপরাধে ধৃত আসামী বিল্লাল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে জেলে যায় এবং অপর আসামী ঝর্ণা আক্তার গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। ভিকটিম সোর্স জাকিরের কারণে এলাকায় তাদের মাদক ব্যবসায় বিঘœ ঘটে এবং বিল্লাল ও ঝর্ণা আক্তারের স্বামীকে আটকের পিছনে সোর্স ভিকটিম জাকিরের ভূমিকা রয়েছে বলে তারা জানতে পারে। এরই প্রতিশোধ হিসেবে ধৃত আসামীদ্বয় তাদের পথের কাঁটা ভিকটিম জাকিরকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন দুপুর বেলায় তাদের পরিকল্পনা মতে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মরকুন পশ্চিম পাড়া এলাকায় জাকিরকে একা পেয়ে ধৃত আসামী বিল্লাল তার কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিমের দুই উরুতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে এলাপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। ফলে ঘটনাস্থলেই ভিকটিম জাকির রক্তাক্ত জখম অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উক্ত এলাকার বাসিন্দারা ভিকটিমকে গুরুতর জখম অবস্থায় নিকটস্থ টঙ্গী শহিদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ভিকটিমের মৃত্যু হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।