গণবাণী ডট কম:
অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) সার্ভারের এপিআই (এপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেইস) ব্যবহার করে ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী ও সহায়তা, যাচাই, স্মার্ট কার্ডের তথ্য যাচাই, জাতীয় পরিচয় পত্রে নতুন তথ্য সংযোজন এবং বিয়োজন করার অপরাধের মূলহোতা ও অনলাইনে সাইবার ক্রাইমের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। তাদের শুক্রবার ভোরে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন বাঘিয়া দক্ষিনপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আসামীরা হলো গাজীপুর মহানগরীর এসএম শফিকুর রহমানের ছেলে এস এম শাওন (২৯), মো: ওয়ালি উল্লাহর ছেলে মো: খালেদ আহম্মেদ শান্ত (১৯) এবং এসএম শফিকুর রহমানের ছেলে মো: আল আমিন (২৩)।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ৩টি সিপিইউ, ৪টি হার্ড ডিক্স, ২টি পাওয়ার ক্যাবল, ১টি মোবাইল ক্যামেরা, ২টি জাতীয় পরিচয়পত্র, ২টি এটিএম কার্ড, ২টি নগদ কার্ড, ১টি ভ্যাকসিন কার্ড, ২টি হেডফোন, ২টি ম্যানিব্যাগ, ৬টি মোবাইল ফোন, ৭টি সীম কার্ড ও নগদ ৮ হাজার ১৯২ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার বিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার ও সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) নোমান আহমদ।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সার্ভারে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উপাত্ত সংরক্ষিত থাকে। শুধুমাত্র চুক্তিবদ্ধ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উক্ত সার্ভার ব্যবহারের অনুমতি নাই। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান সমূহ শুধুমাত্র তাদের প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহিতাদের তথ্য উপাত্ত যাচাই করতে পারে। অননুমোদিত কেউ তা করতে পারে না। জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে জাল এনআইডি কার্ড তৈরী বা তৈরীতে সহায়তা করা এমনকি সোর্স কোড পরিবর্তন করিয়া নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য যে কোন অননুমোদিত ব্যক্তি বা সংস্থা দ্বারা সংগ্রহ ও ব্যবহার করা দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তিনি আরো জানান, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আইডিইএ (২য়) পর্যায় প্রকল্পের সহকারী প্রোগ্রামার রুবেল চন্দ্র মজুমদার (২৮) গত ০৬ জুলাই অফিসে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার কালে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ২টি এ্যাপস নজরে আসে, যার মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের এনআইডি সার্ভারে রক্ষিত তথ্য উপাত্ত উম্মুক্তভাবে যাচাই করা হচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা গুগল প্লে-স্টোরে NID Query নামীয় দুইটি এ্যাপস্ ব্যবহার করে অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই এর কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যায়। উক্ত এ্যাপস এর মাধ্যমে এনআইডি ধারী সকল নাগরিকের ছবিসহ এনআইডির তথ্য উপাত্ত যাচাই ও সার্ভারে রক্ষিত তথ্য বেআইনিভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে। যার ফলে জাতীয় তথ্য ভান্ডারে রক্ষিত নাগরিকদের তথ্য হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে। পরে তিনি র্যাব-১, এর নিকট একটি অভিযোগ করেন এবং আইনগত সহায়তা কামনা করে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১, ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
তিনি আরো জানান, এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে উক্ত আসামীদের গ্রেফতার করে। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে অবৈধভাবে জাতীয় এনআইডি সার্ভারের এপিআই (এপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেইস) ব্যবহার করে ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী ও সহায়তা, যাচাই, স্মার্ট কার্ডের তথ্য যাচাই, জাতীয় পরিচয় পত্রে নতুন তথ্য সংযোজন এবং বিয়োজন করার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।