গণবাণী ডট কম::
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো:জাহিদ আহসান রাসেলের ২০১৮ সালের তুলনায় প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর আয় ও সম্পদ কমেছে।
জাহিদ আহসান রাসেল স্নাতক পাস। তাঁর নামে কোন মামলা নেই।
নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রদত্ত হলফনামার তথ্য থেকে এসব জানা গেছে।
হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, রাসেলের নামে কোন কৃষি জমি বা কৃষি খাতে কোন আয় নেই। এমনকি বাড়ি ভাড়া বাবদ রাসেলের কোন আয় নেই। তবে, তার উপর নির্ভরশীলদের বাড়ি ভাড়া বাবদ আয় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। তবে ২০১৮ সালে এইখাতে তাদের কোন আয় ছিল না।
প্রতিমন্ত্রী রাসেলের বর্তমানে ব্যবসা থেকে আয় ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা। কিন্তু ২০১৮ সালে ব্যবসা থেকে রাসেলের আয় ছিল ৭ লক্ষ ৮৫ হাজার ৬শ টাকা এবং তার উপর নির্ভরশীলদের আয় ছিল ৩ লক্ষ ৫ হাজার ৬শ টাকা। অর্থাৎ ব্যবসা থেকেও রাসেল ও তার নির্ভরশীলদের আয় কমেছে।
বর্তমানে রাসেলের শেয়ার সঞ্চয় বা ব্যাংক আমানত ৯৮ হাজার ৩৯০ টাকা। তার উপর নির্ভরশীলদের শেয়ার সঞ্চয়, ব্যাংক আমানত ১০ দশ হাজার ৯৮৪ টাকা ২৮ পয়সা। ২০১৮ সালে রাসেলের শেয়ার সঞ্চয় বা ব্যাংক আমানত ছিল ৬১ হাজার ৩০৬ টাকা এবং তার নির্ভরশীলদের ছিল ৪০২ টাকা। ৫ বছরে তাদের শেয়ার সঞ্চয় বা ব্যাংক আমানত বেড়েছে।
সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সম্মানী ভাতা বাবদ তিনি আয় করেছেন ১৭ লক্ষ ৯৪ হাজার ৪২০ টাকা। বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত ৩৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪৩৮ টাকা। ২০১৮ সালে চাকুরী বা সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা হতে আয় ছিল ২২ লাখ ২৯ হাজার ১০০ টাকা।
২০১৮ সালে গাড়ী বিক্রি বাবদ মূলধনী আয় ছিল ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার ৯৫৭ টাকা। কিন্তু আসলে এই খাতে কোন আয় নেই।
বর্তমানে জাহিদ আহসান রাসেলের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা আছে ১ লক্ষ ৭১ হাজার ১৫১ টাকা ৮৯ পয়সা। তার স্ত্রীর আছে ৫ লক্ষ ৮ হাজার ১৩৩ টাকা ৫৩ পয়সা। যদিও ২০১৮ সালে জাহিদ হাসান রাসেলের নগদ টাকা ছিল ১২ লক্ষ ২৪ হাজার ৫ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল ১৭ লক্ষ ৮৯ হাজার ৭৫০ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পরেও তার নগদ টাকার পরিমাণও প্রায় ২৩ লাখ টাকা কমেছে।
বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাসেলের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ১৪ লক্ষ ১৬ হাজার ১৩১ টাকা ৬২ পয়সা। তার স্ত্রীর নামে সাউথ ইস্ট ব্যাংকে আছে ৯ লক্ষ ৪০ হাজার ৩৪৫ টাকা। ২০১৮ সালে ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা কৃতিত্ব রাসেলের টাকার পরিমাণ ছিল ১৪ লক্ষ ৬২ হাজার ৪৩২ টাকা আর তার স্ত্রীর নামে ছিল ১৮ হাজার ৭৯০ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের জমাকৃত অর্থের পরিমাণ না বাড়লেও তার স্ত্রীর নামে প্রায় ৯ লাখ টাকা বেড়েছে।
বর্তমানে রাসেলের নামে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার আছে ২৩ লাখ ৭২ হাজার ৮১০ টাকার, চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের শেয়ার আছে পাঁচ লাখ টাকার। বর্তমানে রাসেলের স্ত্রীর নামে কোন শেয়ার নেই। তবে ২০১৮ সালে রাসেলের নামে বিভিন্ন কোম্পানির বন্ড বা শেয়ার ছিল পাঁচ লাখ ৬০ হাজার ৫৭০ টাকার আর তার স্ত্রীর নামে শেয়ার ছিল ৩৭ হাজার ৫০০ টাকার।
বর্তমানে রাসেলের নামে সংসদ সদস্য হিসেবে করমুক্ত কোটায় প্রাপ্ত দুটি গাড়ি রয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রী নামে ১৩ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি রয়েছে। ২০১৮ সালেও রাসেলের নামে দুটি গাড়ি ছিল কিন্তু তার স্ত্রীর নামে কোন গাড়ি ছিল না।
বর্তমানে রাসেলের ১৪০ তোলা স্বর্ণ ও তার স্ত্রীর ১৪৮ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। ২০১৮ সালে রাসেলের ১৬৬ তোলা স্বর্ণ ছিল, যা বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া যায়। তখন রাসেলের স্ত্রীর ১৬৮ ভরি স্বর্ণ ছিল, যা বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন। অর্থাৎ বর্তমানে তাদের স্বর্ণের পরিমাণও আগের তুলনায় কমেছে।
রাসেলের ২০১৮ সালে ১৭ লক্ষ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল, যা বর্তমানেও রয়েছে।
জাহিদ আহসান রাসেল পৈতৃক সূত্রে একটি রিভলবার ও একটি শর্টগানের মালিক।
প্রতিমন্ত্রী রাসেল অথবা তার স্ত্রী নামে কোন কৃষি জমি নেই। তিনি পৈতৃক সূত্রে গাজীপুর মহানগরীর হিমারদিঘী এলাকায় ১.৬৫ শতাংশ জমি ও উত্তরায় ৫ কাঠার একটি জমির মালিক। এসবের মূল্য আনুমান ২৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার মত। আর পৈত্রিক সূত্রে একটি তিন তলা বাড়ির পাঁচ ভাগের দুই অংশের মালিক, যার মূল্য ৪ লক্ষ ৬৯ হাজার ৩৭০ টাকা। রাসেলের স্ত্রী পৈত্রিক হেবামূলে ঢাকার বনানীতে দুটি ফ্ল্যাটের মালিক।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেলের ২০১৮ সালে ১০ লক্ষ টাকার সুদমুক্ত ব্যক্তিগত ঋণ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তার ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ১২৫৯ টাকার দায় দেনা রয়েছে।