গণবাণী ডট কম:
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, ইরান অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। বৃহস্পতিবার এক টেলিভিশন ভাষণে একথা জানান রুহানি। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেওয়ার পর এই প্রথম সমৃদ্ধকরণ বিষয়ে সরাসরি বক্তব্য দিয়েছে ইরান। খবর : রয়টার্স।
ইরানকে পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ থেকে বিরত রাখতে ২০১৫ সালে ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অ্যাকশন’ নামের একটি চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং চীন। এই চুক্তির শর্ত ছিল, ইরান পরমাণু সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসবে বিনিময়ে ইরানের উপর আরোপিত সকল অবরোধ তুলে নেওয়া হবে। তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন এবং ইরানের উপর নানা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এইসব নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের অর্থনীতি কার্যত পঙ্গু হয়ে পড়ে।
চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কাজ এগিয়ে নিতে থাকে। বর্তমানে সোলাইমানি ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা উত্তেজনা চলছে। এমন সময়ে রুহানি পরমাণু সমৃদ্ধকরণের কাজ দ্রুত গতিতে চলার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন। তিনি বলেন, ‘ইরানের উপর চাপ বাড়ছে, তারপরও আমাদের অগ্রগতি অনেক ভালো। আমরা চুক্তি করার পূর্বে যে পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতাম, বর্তমানে তার পরিমাণ আগের চেয়েও বেড়েছে।’
ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে চুক্তি সংশ্লিষ্ট অন্যদেশগুলো বেশ সরব। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার প্রায় দুই বছর পর চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি তেহরানের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ‘বিরোধ নিষ্পত্তি’ কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দেন। এরপর গত বুধবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিটি এখনো ‘মরে যায়নি’।
অন্যদিকে, গত বুধবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রস্তাবিত আগের চুক্তির পরিবর্তে ‘ট্রাম্প চুক্তি’ এর প্রস্তাবও হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। এমন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার রুহানি আগের তুলনায় আরও বেশি পরিমাণে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের ঘোষণা আগের চুক্তির ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলে দিল।