গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শ্রীপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে বাড়ীতে ঘরের খুঁটির সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। শনিবার রাতে বাড়িতে আগুন লাগলে শেকল ছিঁড়ে পালাতে না পেরে আগুনে পুড়ে ঘরের সাথে শিকল বাঁধা অবস্থায় অঙ্গার হন হতভাগ্য ওই নারী। মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিমখণ্ডের দারোগার চালা এলাকায়। আসমা কৃষক আবদুল কাদিরের মেয়ে।
হতভাগ্য নারীর নাম আসমা খাতুন (৩৫)। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের আওয়ালের মোড় এলাকার আব্দুল কাদিরের মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েক বছর যাবৎ আসমা খাতুন মানসিক অসুস্থ্যতায় ভুগছিল। মাঝে মধ্যেই সে কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়ে যেতো। তার অস্বাভাবিক আচরণের কারণে আসমাকে ঘরের ভেতর শিকল দিয়ে বেঁধে দরজায় তালা লাগিয়ে আটকে রাখা হতো। দারোগার চালা এলাকায় বাবার বাড়িতে থাকতেন আসমা। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আসমাকে তালাবদ্ধ করে রাখা ঘরে আগুন লাগে। এসময় তার স্বামী নজরুল ইসলাম ঘরে ছিলেন না। আগুন লাগার পর পরিবারের অন্য সদস্যরা নিরাপদে ঘর ধেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু শেকলে বাঁধা ঐ নারী শিকল ছিড়তে না পারায় ঘর থেকে বের হতে পারেনি।
মাওনা ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার মিয়া রাজ উদ্দিন জানান, শ্রীপুরের দারোগারচালা এলাকার আব্দুল কাদিরের বাড়িতে শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে মাওনা ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়। তারা প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। বাড়ির আশেপাশে পানির উৎস না থাকায় দূর থেকে পানি এসে আগুন নেভাতে হয়েছে। ততক্ষনে গৃহকর্তার মেয়ে আসমা আক্তার আগুনে পুড়ে মারা যায়। তার লাশ ঘরের ভিতরে শিকলে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়।
তিনি আরো জানান, অগ্নিকান্ডের এ ঘটনায় বাড়ির ৮টি ঘর মালামালসহ পুড়েছে। অগ্নিকান্ডের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিটের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।