গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালীগঞ্জে করোনায় নতুন করে পজিটিভ হয়েছেন ২ জন। এ নিয়ে কালীগঞ্জে মোট পজিটিভ হয়েছেন ৯৩ জন। এদের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে করোনা জয় করেছেন ৮৭ জন।
জানা যায়, বর্তমানে করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে রাজধানী ঢাকার পরে নারায়ণগঞ্জের অবস্থান। এর পরেই রয়েছে শিল্প নগরী খ্যাত গাজীপুর জেলা। ইতিমধ্যে এ জেলাকে করোনার হটস্পট হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। এ জেলায় করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে গাজীপুর সদরের পরেই ৫ উপজেলার মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী ২৭ জন, ১৬ পুলিশ কর্মকর্তা ও ইউএনও অফিসের কর্মচারী ৪জন এবং এর বাহিরে রয়েছে আরো ৪৬জনসহ মোট ৯৩জন আক্রান্ত হয়েছেন।
উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ছাদেকুর রহমান আকন্দ সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কালীগঞ্জ থেকে করোনা সন্দেহে ৪৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। নমুনা পরীক্ষার পর ওই ৪৫জনের মধ্যে ২জনের শরীরে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া যায়। এ দুইজনই কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা। তবে আক্রান্তের ৯৩ জনের মধ্যে ৮৭ জনই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। বাকী রয়েছে মাত্র ৬জন। এদের সবাই আইসোলেশনে রয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল এ উপজেলার পৌর এলাকায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর কালীগঞ্জ পৌর এলাকা লকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা ও পৌর প্রশাসন। পরদিন ১৩ এপ্রিল পৌর এলাকার বাহিরে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। যার ফলে উপজেলা প্রশাসন পুরো কালীগঞ্জকেই লকডাইন ঘোষণা করেন। এরপর থেকে কালীগঞ্জে বেড়েই চলছিল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এপ্রিলের শেষের দিকে এ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা একেবারেই শূণ্যের কোঠায় নেমে আসলেই ৯ মে ৪৫জনের নমুনা সংগ্রহে নতুন করে ২জনের মধ্যে করোনা ভাইরাস পজেটিভ পাওয়া যায়। তবে এ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনো পর্যন্ত কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক বলেন, থানা কর্মরত ডিএসবির একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) গত ১৫ এপ্রিল প্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়। এরপর থানার আরো ৪ জন এসআই, ২জন পিএসআই, ৩জন এএসআই, একজন কনস্টেবল, একজন বিশেষ আনসার এবং কালীগঞ্জ সার্কেল অফিসে কর্মরত ৪ জনসহ মোট ১৬ পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়। সকলেই আইসোলেশনে থেকে বর্তমানে করোনা মুক্ত। আর করোনা জয় করে আসা ওই ১৬ পুলিশ সদস্যকে পুলিশ সুপার শাসসুন্নাহার ফুল ও উপহার দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে বরণ কনে নেন।
উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও ইউএনও মো. শিবলী সাদিক জানান, ১২ এপ্রিল থেকে ০৯ মে পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ উপজেলায় ৬৪২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর থেকে পরীক্ষা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আক্রান্তদের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ চিকিৎসক, ৬ নার্স ও ১৩ কর্মচারীসহ ২৫ জন, ১৬ পুলিশ সদস্য, তার অফিসের ৪ জন কর্মচারীসহ মোট ৮৭ জন সুস্থ্য হয়ে ফিরেছেন। করোনাকে জয় করে ঘরে ফিরতে আর মাত্র ৬ জন বাকী রয়েছে।