গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের মহানগরীর বাসন ও উত্তরা থেকে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার করেছে র্যাব। এসময় অপহরণের ১৮ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত শিশু সাব্বিরকে উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব ১ সূত্রে জানা যায়, ১০ মে রবিবার সকালে গাজীপুরের মহানগরীর বাসন সড়ক এলাকার ভাড়াটিয়া আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে সাব্বিরকে একটি চক্র অপহরণ করে। একই দিন অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে আবু বকরের নিকট ছেলে মুক্তিপণ হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবী করে। টাকা না দিলে অন্যথায় অপহরণকারীরা তার ছেলেকে হত্যা করে লাশ গুম করবে বলে জানায়। পরে এ বিষয়টি সাব্বিরের পিতা থানায় জানালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের এসি সহাকারী পুলিশ কমিশনার (সদর জোন) মোঃ সোহরাব হোসেন এবং বাসন থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং ভিকটিমের পরিবারের পক্ষে থেকে র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানী, পোড়াবাড়ী ক্যাম্প, গাজীপুর এর কাছে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য আইনগত সহায়তা কামনা করেন।
পরে অপহৃত শিশু সাব্বির হোসেন (৬) কে উদ্ধারের জন্য র্যাব-১ এর স্পেশালাইজড কোম্পানী, পোড়াবাড়ী ক্যাম্প কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। তারা দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করেন এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় মাত্র ১৮ ঘন্টার মধ্যে ১১ মে ভোর রাত ৩ টার সময় র্যাবের আভিযানিক দল গাজীপুর মহানগর ও রাজধানীর উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মুক্তিপণের টাকা লেনদেনের সময় অপহরণকারী চক্রের মূলহোতাসহ ৪ জনকে আটক করেন।
এরা হলো মোঃ নাজমুল হুদা@শামীম (২৮), মোঃ নয়ন মিয়া (৩৪), মোসাঃ সুমা আক্তার (২৫), সুরাইয়া আক্তার শিউলি (২৬)।
আটককৃত আসামীদের দেওয়া তথ্যমতে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি ফ্ল্যাটের পরিত্যাক্ত গোপন কক্ষ থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় অপহৃত ভিকটিম মোঃ সাব্বির হোসেন (৬) কে উদ্ধার করে র্যাব। এসময় ধৃত আসামীদের নিকট হতে ০৪ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
অপহরণকারী চক্রের ২জন ভিকটিমদের সাথে একই বাড়ীতে ভাড়া থাকত। প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া মোঃ নাজমুল হুদা ও তার বন্ধু নয়ন মিয়ার পারস্পারিক যোগসাজসে ভিকটিম সাব্বিরকে নিয়ে এক বাসায় লুকিয়ে রাখে এবং তারা স্বাভাবিক কাজকর্ম করে। সন্ধ্যায় তারা ভিকটিমের বাসা পরিবর্তন করে । র্যাব অভিযান শুরু করলে রাতে তারা উত্তরার ৯নং সেক্টরের নির্মাণাধীন বাসায় শিশুটিকে লুকিয়ে রাখে এবং ধরা পড়ার ভয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে।
আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘ দিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ, চুরি ও ছিনতাইসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত। তারা পরস্পর যোগসাজসে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে শিশু সাব্বির কে অপহরণ করেছিল বলে স্বীকার করে। ধৃত আসামীদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল যেকোন উপায়ে বিপুল টাকা উপার্জন করে গাজীপুর শহরে একটি ফ্ল্যাট বাসা ক্রয় করে সুন্দর ভাবে জীবন-যাপন করবে। তাদের এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য তারা এই অপহরণ করেছে বলে স্বীকার করে এবং তারা ধনী পরিবারের শিশুদেরকে টারর্গেট করে উক্ত কার্যক্রম করতে থাকে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।