গণবাণী ডট কম:
অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে ও চুরি করে সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় ৫ দিন কারাভোগের পর আজ রবিবার বিকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারর থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করেছেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। এসময় কারাগার থেকে বাইরে বের হয়ে আসলে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন রোজিনার পরিবারের সদস্যরা।
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার সূত্রে জানা যায়, দুপুরের পর রোজিনার জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌছালে সেগুলো যাচাই করা হয়। পরে বিকাল ৪টার দিকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩-এর আইনের মামলায় গ্রেফতার হয়ে প্রথম কোন সাংবাদিক কারাবাস করলেন। আজ রবিবার সকালে ঢাকার বিচারিক আদালত শর্ত সাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করার পর রোজিনার মুক্তির লক্ষে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে ভীড় করতে থাকেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা।
একইভাবে রোজিনার মুক্তির আশায় কারা ফটকে দুটি মাইক্রোবাস যোগে তার পরিবারের সদস্যরাও আসেন। সেখানে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে তারাও রোজিনার মুক্তির অপেক্ষা করতে থাকেন। কারা ফটকে আগত স্বজনদের মধ্যে ছিলেন রোজিনা ইসলামের বোন লিনা আক্তার, দেবর জাহিরুল ইসলাম, ভগ্নিপতি প্রিন্স জাকারিয়া, ভাগ্নি মারিয়া রাউকি, সাংরিল ও ননদ রোজি আক্তারসহ ১৪/১৫ জন।
দুপুরে জামিনের কাগজপত্র যাচাই শেষে কারা অভ্যন্তরের প্রবেশের অনুমতি পান আগত স্বজনরা। বিকাল সোয়া ৩টার দিকে দুটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস যোগে স্বজনরা কারা অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। পরে নানা আইনী আনষ্ঠানিকতা শেষে ৪টার দিকে রোজিনা কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। পরে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে স্বজনরা কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। দুটি মাইক্রোবাস কারা ফটকের সামনে আসলে গণমাধ্যম কর্মীর চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ধরে। এসময় প্রায় ১০ মিনিট দুটি মাইক্রোবাস কারা ফটকের সামনে আটকে যায়। কিন্তু রোজিনা বা তার পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।
এসময় মাইক্রোবাসের অভ্যন্তরে একটি মাইক্রোবাসের চালকের পাশের আসনে মুখে মাস্ক পরে চোখ বন্ধ করে আসনে পিছন দিকে হেলান দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার কক্ষে পাঁচ ঘন্টার বেশি সময় রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সোমবার রাতেই তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতায় মামলা করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নথি চুরি এবং অনুমতি ছাড়া সেই নথির ছবি তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পরদিন মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল পৌনে ৮টার দিকে শাহবাগ থানা থেকে তাকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ১০টার পর তাকে আদালতে তোলা হয়। এদিন পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার। অপরদিকে তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকর্তার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। কিন্তু পরে আদালত আদেশ না দিয়ে জামিন আদেশের জন্য রবিবার দিন ঠিক করেন।