গণবাণী ডট কম:
শিল্প শহর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগধ আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০ জন।
অগ্নিগদ্ধ ৩৭ জনকে শুক্রবার রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউটে ভর্তিম করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ আরো ১৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের সকলের শরীরের ৩০ ভাগের বেশী পুড়েগেছে। অনেকের স্বাসনালী পুড়ে যাওয়া তাদের অবস্থা শংকামুক্ত নয় বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
স্থানীয় একজন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত মসজিদে রাত সাড়ে আটটার দিকে মসজিদে প্রচন্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাযয়। এরপর মসজিদে আগুন ধরে যায়। এশার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে রাতে শতাধিক মুসল্লি এসেছিলেন। নামাজ শেষে অনেকে মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেলেও অনেকে তখনো মসজিদেই ছিলেন। ঠিক তখনই বিস্ফোরণ হয়।
পরে গুরুতর অগ্নিদগ্ধ ৩৭ জনকে জরুরী ভিত্তিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ২০ জন মারা গেছেন। মৃত্যুবরণকারীরা হলেন- রাসেল (৩৪), রিফাত (১৮), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮), সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), হুমায়ুন কবির (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), জুয়েল (৭), জয়নাল আবেদিন (৪০) ও মাইনুদ্দিন (১২)। নিহত ১৭ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে রাতে ইমামসহ আরো কয়েকজন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থা বেশ সংকটজনক বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের দমকল বাহিনীর উপ পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তারা সন্দেহ করছেন। তিনি জানান, মসজিদটির মেঝের নীচ দিয়ে গ্যাসের পাইপ গেছে। সেই পাইপে ফুটো হয়ে মসজিদের ভেতরে হয়তো অনেক গ্যাস জমে ছিল। এই অবস্থায় কেউ ভেতরে ইলেকট্রিক সুইচ অন করার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেখান থেকে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে গেছে। তারপর মসজিদের এয়ার কন্ডিশনারগুলোও বিস্ফোরিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মসজিদের মেঝের নীচ দিয়ে কিভাবে গ্যাসের পাইপ গেল, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। এগুলো তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় অনেক মানুষ জানিয়েছেন, মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তারা প্রায়শই গ্যাসের গন্ধ পেতেন। দমকল কর্মীরা গিয়ে মসজিদের মেঝের নীচ দিয়ে যাওয়া গ্যাস লাইন থেকে গ্যাস বেরুতে দেখেন। তারা গ্যাস লাইনটি বন্ধ করে দেন।
যদিও গেল রাতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, মসজিদের ভিতরে এসির বিস্ফোরণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডাঃ সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেছেন, হাসপাতালে সবারই সংকটজনক অবস্থা।কেউ আশংকামুক্ত নয়। বেশিরভাগ রোগীর কমপক্ষে তিরিশ শতাংশ পুড়েছে। অনেকের তারও বেশি। বেশিরভাগেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।