নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
গাজীপুরের কাপাসিয়া-শ্রীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দস্যুনারায়ণপুর এলাকায় সড়কের দেবে যাওয়া অংশটি একদিনের মধ্যে সংস্কার করা হয়েছে। ফলে সড়কটি সাময়িকভাবে যান চলাচলের উপযোগী করার পর শনিবার থেকে হালকা যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
গত শুক্রবার ভোরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নির্মিত এ সড়কটির পূর্ব-পশ্চিমে দৈর্ঘ্য ৩০০ ফুট, প্রস্থে ২০ ফুট কার্পেটিং করা রাস্তাসহ প্রায় ১২০ ফুট জমি সমতল থেকে প্রায় ১৫ ফুট নীচে দেবে যায়। সড়কটি যাওয়ার ফলে উপজেলার ব্যস্ততম এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একই স্থানে গত ১৬ বছরে আরো দুইবার গাছপালা ও নদী তীরবর্তী জমিসহ সড়ক দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।
গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম জানান, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি শুক্রবার রাতের মধ্যেই চলাচল উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। স্থায়ী সমাধান করা হবে। স্থানীয়রা জানায়, ২০১৮ সালে সড়কটি দেবে যাওয়ার পর গাজীপুর সড়ক বিভাগ পুনরায় সড়কটি নির্মাণ করে। নতুনভাবে নির্মিত হবার পর গত কয়েক মাস আগে থেকেই এই অংশে কিছুটা ফাটল দেখা দিয়েছিল। গত মার্চ মাসে সড়কটির ধসে যাওয়া স্থানে দেড়শো ফিটের মত ধনুক আকারে চির দিয়ে ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি দেবে গিয়েছিল। যা ক্রমাগত বেড়েছে। এই সড়ক দিয়ে কাপাসিয়া থেকে শ্রীপুর ও শ্রীপুর থেকে কাপাসিয়া বড় ছোট হালকা ভারি যানবাহন চলাচল করে থাকে। তখন থেকেই যে সকল যানবাহন প্রতিদিন এই পথে আসা যাওয়া করে তারা এখানে এসে গতি কমিয়ে দিয়ে সাবধানে চলাচল করছিল। এখানে সড়কের দুই পাশেই সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে, সেখানে লেখা সয়েল সেটেলমেন্ট পর্যবেক্ষণ চলিতেছে’। প্রায় ২০ ফুট প্রস্থ সড়কটি ধনুক আকারে ফাটল দিয়ে কিছুটা দেবে গিয়ে খাড়া গতিরোধকে পরিণত হয়েছিল। যে কোন সময় আবারো সড়ক দেবে গিয়ে যে কোন দূর্ঘটনা ঘটতে পারে স্থানীয়দের আশঙ্কা ছিল।
এই একই স্থানে প্রথম ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ও পরে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয়বার বড় ধরনের ধসের ঘটনা ঘটেছিল । এলাকার স্থানীয়দের ধারণা ছিল, সড়কের পাশ দিয়ে বয়ে চলা শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারনেই বারবার সড়ক দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের সড়ক দেবে যাওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তখন তারা মত দিয়েছিলেন, দেবে যাওয়া অংশে মাটির নিচে নিম্নমানের পিট জাতীয় কয়লা (কালো মাটি) থাকতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে গেলে এসব কয়লা জাতীয় মাটি তার ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে নিচে নেমে যায় এবং সড়কে ধস নামে।