গণবাণী ডট কম:
রাষ্ট্র বিরোধী উস্কানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর হাতে আটক শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আজ বৃহষ্পতিবার সকালে গাজীপুর আদালতে তোলা হয়েছে। পরে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরেণের নির্দেশ দিয়েছেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানা পুলিশ ও র্যা বের যৌথ প্রহড়ায় আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গাজীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: শরিফুল ইসলামের আদালতে হাজির করে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে গাজীপুর কোর্ট হাজতখানা থেকে জেল হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে গেল বুধবার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে তাকে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে আটক করে র্যা ব।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (এমপি) সহকারী উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) হাছিবুল আলম জানান, আটকের পর গেল বুধবার রাত আড়াইটার দিকে শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানিকে জিএমপির গাছা থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব-১। এ থানায় র্যাব বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। এ মামলায় জিএমপির গাছা থানা পুলিশ আজ সকালে তাকে আদালতে হাজির করেছে।
তিনি আরো জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮ ও ৩১ ধারায় মামলা করা হয়েছে। র্যাব-১ এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
র্যাব বলছে, তারা রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে, যিনি ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে বাংলাদেশে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন। র্যাবের ভাষায়, তাকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী ও উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে নেত্রকোনা থেকে আটক করা হয়।
বিবিসি জানায়, বিভিন্ন স্থানে ওয়াজে বক্তব্য দিয়ে পরিচিতি লাভ করেছেন। সম্প্রতি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যেসব বিক্ষোভ হচ্ছে তার কয়েকটিতে খুব কড়া ভাষায় বক্তব্য দিতে দেখা গেছে মি. ইসলামকে।
ফেসবুক ও ইউটিউবে তার যেসব ছবি ও ভিডিও আছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, কণ্ঠ, শারীরিক গঠন ও মুখাবয়বের কারণে তাকে কম বয়েসী ছেলেদের মত মনে হয়। ছোটখাটো গড়নের এই মানুষটির বয়স সম্পর্কে স্পষ্ট কোন তথ্য নেই, তবে তার বয়স কুড়ি থেকে ত্রিশ বছরের মধ্যে বলে একটি ধারণা প্রচলিত আছে।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার আল মইন বলছেন, “তার আসল বয়সটা আমাদের জানা নেই। তবে তিনি বয়সে শিশু নন, তা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি।” ইউটিউবে তার কয়েকটি ওয়াজের ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তার নামের সাথে ‘শিশু বক্তা’ যোগ করার প্রতিবাদ করেন এবং নিজেকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে দাবি করেন। তাকে তার অনুসারীরা রফিকুল ইসলাম মাদানী নামে সম্বোধন করেন।
র্যাবের মি. মইন জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে হওয়া সহিংসতার প্রেক্ষিতে রফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। “তিনি বিভিন্ন জায়গায় ‘রাষ্ট্রবিরোধী’, ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্য দিয়ে আসছেন বেশ কিছুদিন ধরেই। সেসব বক্তব্যের কারণে তাকে আটক করা হয়েছে”।
এর আগে ২৫শে মার্চ ঢাকার বায়তুল মোকাররমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভের সময় পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন তিনি। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রফিকুল নেত্রকোনার পশ্চিম বিলাসপুর সাওতুল হেরা মাদ্রাসার পরিচালক। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অঙ্গসংগঠন যুব জমিয়তের নেত্রকোনা জেলার সহ সভাপতি।