গণবাণী ডট কম:
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের একাদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৯ জুলাই। লেখকের নন্দন কানন নুহাশপল্লী, যেখানে তিনি চিরশায়িত আছেন সেখানে আজ নানা আয়োজনে তাঁর পরিবারের স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা লেখককে স্মরণ করলেন।
প্রতিবারের মতো এবারেও সকাল থেকে হুমায়ুন পরিবার, তাঁর ভক্ত, কবি, লেখক আর নাট্যজনেরা ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন নুহাশপল্লীর লিচু তলায়। নন্দিত লেখকের প্রিয় চরিত্র হলুদ পাঞ্জাবিতে হিমু এবং নীল শাড়িতে রূপা সেজে আসেন ভক্ত ও পাঠকেরা। তারা লেখকের প্রতি অতল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কথা জানান।
সকালে হুামায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে হুমমায়ূন আহমেদের কবর জিয়ারত, পুস্পস্তক অর্পণ ও মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রিনা পারভীনসহ হুমায়ূন আহমেদের শুভানুধ্যায়ী ও ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন। লেখকের আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়। আয়োজন করা হয় কুরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল। মোনাজাত পরিচালনা করেন নুহাশ পল্লী মসজিদের ইমাম হাফেজ মুজিবুর রহমান।
এসময় হুমায়ুন ভক্ত হিমেল বলেন, আমাদের প্রিয় স্যার তার নির্মল ও জীবন ঘনিষ্ট লেখনী দিয়ে পাঠক সমাজকে আনন্দ দিয়েছেন। বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে ততদিন হুমায়ূন আহমেদ ততদিন পাঠক হৃদয়ে সমাসিন থাকবেন।
কলেজ শিক্ষার্থী ফারজানা হক বলেন, কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ তার সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে এদেশের সকল ভক্ত ও অনুরাগীদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
কবর জিয়ারত শেষ মেহের আফরোজ শাওন হুমায়ূনের স্বপ্ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন। এসময় তিনি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অনুমতি ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের নাটক সিনেমা প্রদর্শন বন্ধের দাবি জানান।
হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, দুই ছোট সন্তান অকালে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে এই ব্যাপারটি আমাকে ভীষণ কষ্টতাড়িত করে। হুয়ায়ুন আহমেদ কত বড়মাপের একজন লেখক, পরিচালক ও গীতিকার ছিলেন, কত বড়মাপের সৃষ্টিশীল সত্তা ছিলেন তার শূণ্যতা তার অনুপস্থিতে এখন অনুধাবন করা যায়। এ সময় তিনি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে হুমায়ূন পরিবারের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন নাটক ও সিনেমা প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই ব্যাপারটি বন্ধের দাবি জানান তিনি।
নুহাশ পল্লীর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, নুহাশপল্লীতে প্রবেশ করতে প্রাপ্তবয়স্কদের গুণতে হয় ২০০ টাকা। তবে লেখকের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রবেশ ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও লেখকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে পরিবারের সদস্য, প্রকাশক ও আগত ভক্তদের নিয়ে কবর জেয়ারত ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানোনো হয়েছে। এরপর দুপুরে দুইশো এতিমদের খাওয়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, জনপ্রিয় এ লেখক ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ফয়েজুর রহমান ও মা আয়েশা ফয়েজ। ২০১২ সালে ১৯ জুলাই মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যুর পর তাকে গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে তার নিজ হাতে গড়া স্বপ্নের নুহাশ পল্লীতে সমাহিত করা হয়।