গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানার তেতুইবাড়ি এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের হত্যা রহস্য উদঘাটন ও চার আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনারের (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান এসব তথ্য জানান।
নিহতের নাম ফিরোজ মিয়া (৩২)। তিনি টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানাধীন কালিদাস গ্রামের আব্দুল হালিম মিয়ার ছেলে। তিনি নিয়মিত ঢাকার আড়তে কলা বিক্রি করতেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, ঢাকার সাভার থানার হেমায়েতপুর এলাকার মহসীন মিয়া (২৫) ও মেঘলা ওরফে সোহাগ (২৫), ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল থানার জগদল রবিউল ইসলাম রুবেল (১৮) এবং ভোলার বোরহান উদ্দিন থানার চৌমুনীহাট এলাকার আল-আমিন মিয়া (৩০)। রুবেল ও আল আমিন সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে।
জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনারের (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান আরো জানান, গত ২১ আগস্ট রাত দুইটার দিকে মহানগরীর কাশিমপুর থানাধীন তেতুইবাড়ী সাকিনস্থ ব্রিটিশ এ্যামেরিকান টোবাকো ফ্যাক্টরির সামনে উত্তর কর্নারে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপর থেকে কলা ব্যবসায়ী ফিরোজ মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মরদেহের পিঠে, পায়ে ছুরিকাঘাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম ছিল।
তিনি আরো জানান, পরে এ ঘটনায় মামলা রুজ হওয়ার পর জিএমপি উত্তর ডিসি আবু তোরাব মোঃ শামছুর রহমানের দিকনির্দেশনায় এডিসি (অপরাধ) উত্তর মোঃ খায়রুল আলম ও কোনাবাড়ি জোনের এসি দিদারুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে কাশিমপুর থানা পুলিশ তদন্তে নামে। পরে হত্যাকান্ডে সন্দেভাজন আসামী মহসীন মিয়া (২৫) ও রবিউল ইসলাম রুবেল (১৮) কে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দী প্রদান করে।
তিনি জানান, তারা জানায়, গত ২০ আগস্ট রাতে আসামী মহসীন, রবিউল, আলামিন, মেঘলাগণ ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস যোগে রাত দেড়টার দিকে সাভারের শ্রীপুর বাসস্ট্যন্ডে আসে। সেখান থেকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তারা চন্দ্রার দিকে যাওয়ার পথে ভিকটিম ফিরোজ মিয়াকে একটি পিকআপ গাড়ী পরিষ্কার করতে দেখে। পরে আসামীরা কাছে গিয়ে তাদের সাথে থাকা সুইচ গিয়ার ও চাপাতির ভয় দেখিয়ে ফিরোজ মিয়াকে গাড়ীতে তুলে। আসামী মহসীন গাড়ীটি চালাতে থাকে এবং রবিউল, আলামিন, মেঘলা ফিরোজের সাথে থাকা টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাঁধা দিলে রবিউল তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে পায়ে কোপ মারে এবং আলামিন তার হাতে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়ে তার পিঠে আঘাত করে হত্যা করে। পরে আসামীরা ছিনতাইকৃত সাত হাজার টাকা নিয়ে পিকআপ গাড়ীসহ মরদেহ গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানাধীন তেতুইবাড়ী সাকিনস্থ ব্রিটিশ এ্যামেরিকান টোবাকো ফ্যাক্টরীর সামনে উত্তর কর্নারে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপর লাশ ও পিকআপ গাড়ী ফেলে রাস্তা পার হয়ে সাভারের দিকে পালিয়ে যায়।
তিনি জানান, আসামীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ছিনতাই ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার চাকু এবং ছিনতাইকৃত এক হাজার টাকা এবং রবিউল এর নিকট হইতে ছিনতাইকৃত এক হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের অথ্য অনুযায়ী পলাতক আসামী আল আমিন ও মেঘলাকে সাভার থানাধীন হেমায়তপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।