গণবাণী ডট কম:
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, আজকে একটি মহল- বিএনপি-জামাত দুষ্ট চক্র নানারকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যারা স্বাধীনতা কখনো মেনে নেয়নি, বাংলাদেশে উন্নয়ন হতে দেয়নি, যারা মানুষকে সবসময় জিম্মি করে ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ চরিতার্থ করেছে, যারা একাত্তরের গণহত্যাকারীদের, ৭৫ এর হত্যাকারী, ২১ আগস্টের এর হত্যাকারী, ২০০১ পরবর্তী নির্বাচনে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের হত্যা ধর্ষণ নির্যাতন করে ভয়ংকর পরিস্থিতি করেছিল, যারা ২০১৩ সালে বাংলাদেশে অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়েছিল, তারা আজকে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নানান প্রকার লেবাস ছড়িয়ে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারো দেশকে অস্থীতিশীল করার এক ঘৃণ্য খেলায় মেতেছে।
আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকার আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশকে সফল করতে আয়োজিত গাজীপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় বক্তব্যকালে দীপু মনি এসব কথা বেলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এমপি।
বর্ধিত সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মোল্লা, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, সংরক্ষিত নারী আসনের সদস সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভূঞা ও রুমানা আলী টুসি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, গাজীপুর সিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
দীপু মনি বলেন, কেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামতে হবে? দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। বিএনপি সংবিধান ধ্বংস করেছিল। নির্বাচন ব্যবস্থাও ধ্বংস করেছিল। আমরা জনণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাতা করেছিলাম। তত্ত্বাবধায়ক ব্যববস্থ্যাও নষ্ট করেছে বিএনপি-জামায়াত। আদালতের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হয়েছে। বিএনপি সংবিধান মানে না। ক্ষমতায় যতক্ষণ না বসিয়ে দেওয়া হবে ততক্ষণ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সার-কিটনাশকের জন্য জীবন দিতে হয়। তারা ক্ষমতায় আসলে দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়, বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যায়। বোমা হামলা হয়। দেশের ক্ষতি হয়। মানুষের জান-মালে ক্ষতি হয়। তাদের কাছে দেশ নিরাপদ নয়। আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে অপশক্তি যে কোন মূল্যে প্রতিহত করা হবে।
দীপু মনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম লাভ করেছে এবং মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সব সময় কাজ করে চলেছে। আর এ কারণেই বাংলাদেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তার প্রমাণ এই গাজীপুরেই রয়েছে। ৭৫ এ প্রাণ দিতে হয়েছে এই গাজীপুরের কৃতি সন্তান তাজউদ্দীন আহমেদকে। স্বৈরাচার এরশাদের সময় প্রাণ দিতে হয়েছে শহীদ ময়েজ উদ্দিনকে। আবার যারা আজকে গণতন্ত্রের জন্য কান্নাকাটি করে, আজকে যারা মানবাধিকার নিয়ে অশ্রু বর্ষণ করে, তারাই প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারকে। কাজেই অনেক শহীদদের রক্তে রঞ্জিত এই গাজীপুর।
তিনি বলেন, এখন তারা নানান রকম সমাবেশ ডাকছে। তাদের অতীতের সমাবেশ গুলো প্রমাণ করে যে, তারা সহিংসতা ছাড়া আর কিছু জানে না। কাজেই শান্তির পক্ষে, শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা, দেশের মানুষের জান মালের নিরাপত্তা বিধান করা, এই সমস্ত কাজে সরকার হিসেবে যেমন আমাদের দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি আওয়ামী লীগ হিসেবে, যেই দল এই দেশের মানুষের ভাষার অধিকার এনে দিয়েছে, যে দলের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, গণতন্ত্র পেয়েছি, যে দলের নেতৃত্বে আমরা উন্নয়ন পেয়েছি, সেই দলের দায়িত্ব রয়েছে, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং মানুষের জান মালের নিরাপত্তা বিধান করা। এজন্যই আমরা সরকারের পাশাপাশি রাজপথে থেকে সমস্ত অপ শক্তিকে প্রতিহত করবো।
তিনি আরো বলেন, এ কারণেই আগামী ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছে বিএনপি জামাত স্পষ্টই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করতে চায়। মানুষের জান মালের ক্ষতি করতে চায়, কাজেই আমাদেরকে ২৮ তারিখে সতর্ক থাকতে হবে, আমাদেরকে পথে থাকতে হবে, রাজপথে থেকে এই অপশক্তি যদি কোন ধরনের শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার কাজ করে, তাহলে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, যারা দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ ও শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করার জন্য সমাবেশের ডাক দেয়, তারা যেন কোনভাবেই তাদের অপ-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারে, সেজন্য আমাদেরকে মাঠে থাকতে হবে। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে মানুষের জান মালের নিরাপত্তা বিধান করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা-কে অব্যাহত রাখতে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেজন্য আজকের এই বর্ধিত সভায় মাধ্যমে গাজীপুর জেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সকল নেতাকর্মী যাতে অধিক সংখ্যক ঢাকার সমাবেশে উপস্থিত থাকেন সেজন্য কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, কিভাবে আগামী নির্বাচনে এই অপশক্তিকে পরাভূত করে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে কি করে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের উন্নয়নকে, গণতন্ত্রকে অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।