গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকায় দুটি জুয়েলারি দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আন্ত: জেলা ডাকাত দলের ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। এসময় লুণ্ঠিত ৪৩ ভরি স্বর্ণলঙ্কার, ৬শ গ্রাম রূপা, বিস্ফোরক ও নগদ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার সকালে গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মনির মোল্যা ওরফে মনির ওরফে আকুব্বর হোসেন আকু (৩৮), আলমগীর হোসেন ওরফে আলম (৪০), মো. রানু শেখ ওরফে নান্নু শেখ (৩৮), মো. সাইদুর সরদার (৪৪), বাদশা প্রামাণিক ওরফে বাবু ওরফে বাদশা বাবু (৩৮), নাজমুল (২৬), সঞ্জয় সরকার (৪০), মো. সুজন (২৪), মোসাম্মৎ ছুম্মা খাতুন (৩২) ও বিবেক পাল (৪২)।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একদল ডাকাত গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন জৈনা বাজার গফুর সুপার মার্কেটের নিউ দিপা জুয়েলার্স ও লক্ষী জুয়েলার্সে দূর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাত দল ঘটনাস্থলে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও চাপাতি প্রদর্শন করে সর্বমোট ৮০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৫শ ভরি রূপা ও নগদ ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা লুট করে। ডাকাত দলের গুলিতে দিপা জুয়েলার্সের মালিক দেবেন্দ্র কর্মকার (৪০) গুরুত্বর আহত হন। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানা মামলা দায়ের করা হয়।
পরে গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম-বার এর সার্বিক তত্বাবধানে ও নির্দেশনায় একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোহাম্মদ আফজাল হোসেনসহ সঙ্গীয় ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত টিম পরে ঘটনার দিনের সিসি টিভির ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। অন্যান্য তথ্য প্রমানাদীর ভিত্তিতে ২২ ও ২৩ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ, পাবনা, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা মেট্টোপলিটন, ঢাকা জেলা, গাজীপুর মেট্টোপলিটন ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির ঘটনার সরাসরি সম্পৃক্ত আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৪৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৬০০ গ্রাম রূপা, এক লাখ ৫৬ হাজার ৩২০ টাকা, উদ্ধার করা হয়। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৭টি ককটেল, ১টি চাপাতি ও ১টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সঞ্জয় সরকারের ঢাকার আশুলিয়ায় ও বিবেক পালের ধামরাইয়ে স্বর্ণের ব্যবসা রয়েছে। তারা স্বর্ণের ব্যবসার পাশাপাশি ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।তারা লুণ্ঠিত স্বর্ণ ও রূপা গলিয়ে অলঙ্কার বানিয়ে বিক্রি করতেন। এছাড়া গ্রেফতারকৃত মনির কালিয়াকৈর এলাকার ভান্নারা এলাকায় এবং আলমগীর গাজীপুর সদরের হোতাপাড়া এলাকায় ভাড়া থেকে ঝুট ব্যবসা ও পোশাক কারখানার চাকরির অন্তরালে ডাকাতি কাজে জড়িত। মনিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক, ডাকাতিসহ ১১টি বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ডাকাত দল তাদের অপরাপর সহযোগীসহ বিভিন্ন সময়ে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর জেলাসহ অন্যান্য জেলার স্বর্ণের দোকানে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত রয়েছে মর্মে তথ্যাদি রয়েছে। এছাড়াও, তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিকাশ এজেন্ট, ব্যাংক গ্রাহক কর্তৃক হতে উত্তোলিত টাকা ও গার্মেন্টসের বেতনের টাকা ছিনতাইয়ের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য প্রমাণাদি পাওয়া গেছে।
এদিকে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোহাম্মদ আফজাল হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত ১০ ডাকাতের মধ্যে ৬ ডাকাত আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবান বন্দি দিয়েছে।