গণবাণী ডট কম:
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি আজ বৃহস্পতিবার। এই জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির এজলাসে বসানো হয়েছে ৮টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ নিরাপত্তার স্বার্থে কড়াকড়ি আরোপ হবে আদালতে প্রবেশের ক্ষেত্রে।
এদিকে, আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ মেডিক্যাল রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটায় রিপোর্ট আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। তিনি জানান, খালেদা জিয়া আথ্রাইটিস রোগে ভুগছেন। নতুন কোন রোগে উনি আক্রান্ত হননি। তার শারীরিক অবস্থা আগের মতই আছে।
গত ৫ ডিসেম্বর চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির দিন ধার্যকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির এজলাসে বিক্ষোভ ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা শুনানির দিন এগোনো এবং ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ এমন শ্লোগানে বিক্ষোভ করেন। এজলাস কক্ষে বিক্ষোভের ঘটনাকে ওই সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেন, আপনারা (বিএনপিন্থী আইনজীবী) কি আদালতের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। ওই হট্টগোল ও বিক্ষোভের ঘটনায় সরকার ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দায়ী করেন।
এরকম পরিস্থিতির মধ্যে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে ঘিরে আজ জনগণের দৃষ্টি সর্বোচ্চ আদালতের দিকে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের উপর শুনানি হবে। আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকার ১২ নম্বর ক্রমিকে জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সেই প্রেক্ষাপটে আজ জামিন শুনানিকে ঘিরে সরকার ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা নিজেদের অবস্থানকে জানান দিতেই আপিল বিভাগে জমায়েত হবেন। নিজ নিজ সংগঠনের আইনজীবীরা তাদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করতে এই জমায়েতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। মঙ্গল ও বুধবার নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে নিজ নিজ সংগঠনের আইনজীবীদের আপিল বিভাগে থাকতে বলা হয়েছে। আইনজীবী জমায়েতের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আপিল বিভাগে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্ট বারের তালিকাভুক্ত নয় এমন আইনজীবীদের আদালত কক্ষে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া নাও হতে পারে।
আপিল বিভাগের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা
গত ৫ ডিসেম্বরের বিক্ষোভ ও হট্টগোলের ঘটনায় এজলাস কক্ষের ভেতরে চারদিকে বসানো হয়েছে আটটি সিসি ক্যামেরা। কেউ যাতে অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটিয়ে পার পেয়ে যেতে না পারে সেজন্য এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন প্রধান বিচারপতি। গত বৃহস্পতিবার বিএনপিপন্থী আইনজীবী শ্লোগান, করতালি ও টেবিল চাপড়িয়ে খালেদা জিয়ার জামিনের দাবি জানান।
সুপ্রিম কোর্ট থাকবে নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা
জামিন শুনানিকে ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট থাকবে নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা। সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের তিনটি ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া আদালত ভবনে প্রবেশ পথে বসানো রয়েছে আর্চওয়ে। কার্ড দেখে পরিচয় নিশ্চিত হয়েই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নজরদারি করবেন।