গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর সদর উপজেলার কেশরিতা এলাকায় লাক্সারি ফ্যান কারখানায় অগ্নিকান্ডে নিহত পরিবারের সদস্যদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। রবিবার দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাব চত্বরে কারখানার পক্ষ থেকে কারখানার হেড অব সেলস অফিসার মো. শফিকুর রহমান নিহত ১০ শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের হাতে ১লাখ টাকা করে চেক তুলে দেন।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে কারখানার হেড অব সেলস অফিসার মো. শফিকুর রহমান বলেন, কারখানা যতদিন থাকবে নিহত ততদিন নিহত প্রতি পরিবারকে প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে এবং উৎসব ভাতা দেয়া হবে। এছাড়াও তাদের পরিবারের যোগ্য ও কর্মক্ষম প্রতিনিধিকে চাকুরি দেয়া হবে এবং সন্তানদের লেখা-পড়ার খরচও দেয়া হবে। এছাড়াও দূর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এসময় তিনি কারখানার অনুমোদন ও অনুমতির সকল কাগজ-পত্র রয়েছে বলে দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে নিহত ১০ জনের সকল পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থেকে অনুদানের টাকা গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে কারখানার লিগ্যাল অ্যাডভাইজার আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ ইতোপুর্বে নিহতদের লাশ দাফনের জন্য তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০হাজার টাকা করে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে আরো ২৫হাজার টাকা করে প্রদান করেছে। এছাড়াও কারখানা কর্তৃপক্ষ আহতদের চিকিৎসার সার্বিক সহায়তা প্রদান করছেন।
উেএলখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় গাজীপুর সদর উপজেলার কেশরিতা এলাকার রুজা হাইটেক গ্রæপের লাক্সারি ফ্যান কারখানায় অগ্নিকান্ডে ১০ শ্রমিক নিহত ও দুইজন দগ্ধ হয়। নিহতরা হলেন- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নোয়াগাঁও এলাকার লাল মিয়ার ছেলে পারভেজ, ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার রাঘবপুর এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে মোঃ তরিকুল ইসলাম, দিনাজপুরের কাহারোল থানার বারপটিকা এলাকার হামিদ মিয়ার ছেলে মোঃ লিমন ইসলাম, গাজীপুর সদর উপজেলার কালনী গ্রামের সাইফুল ইসলাম খানের ছেলে মোহাম্মদ ফয়সাল খান, একই উপজেলার কেশরিতা গ্রামের শ্রী বীরবল চন্দ্র দাসের ছেলে উত্তম চন্দ্র দাস, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মার্তা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে শামীম, একই গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে রাশেদ, রংপুর মহানগরের হারাগাছ থানা কাচুবকুলতলা এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে ফরিদুল ইসলাম, নরসিংদীর বেলাব থানার চরকাশিনগর এলাকার মাজু মিয়ার ছেলে সজল মিয়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর এলাকার মোর্শেদ মিয়ার ছেলে ইউসুফ মিয়া। দগ্ধরা হলেন- স্থানীয় কেশরিতা এলাকার আনোয়ার হোসেন ও পার্শ্ববর্তী জামুনা গ্রামের মো. হাসান মিয়া।
এ ঘটনায় নিহত রাশেদের পিতা কামাল হোসেন বাদী হয়ে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে ৭ জনকে আসামী করে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনা তদন্তের জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
চেক নিতে এসে নিহত ইউসুফ আলীর স্ত্রী হাজেরা জানান, হায়াত মউত আলøাহর হাতে। যিনি গেছেন তিনি তো আর ফিরে আসবেন না। তবে তিনি তাকে ও তার শিশু সন্তানের ভরন-পোষণের দাবি জানিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে।