গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে সোমবার এসএসসি পরীক্ষার ভূয়া প্রশ্ন ফাঁস চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১। এসময় তাদের নিকট হতে আকাশ খান ফেসবুক আইডি, বিভিন্ন ছাত্র ছাত্রীদের সাথে ম্যাসেজ আদান প্রদান, বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদান প্রদান, ফেসবুক চালানোর কাজে ব্যবহৃত ৫ টি মোবাইল, বিকাশের মাধ্যমে সংগৃহীত নগদ ১২ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলো, কালীগঞ্জ থানার জামালপুর ইউনিয়নের নগপাড়া এলালাকর মো মজিবুর রহমানের ছেলে মো.মাহবুব আলম (২৪) এবং একই থানার বাসাইর এলাকার মৃত জীবন দাশের ছেলে দীপ্ত দাশ (২৩)।
র্যাব-১ স্পেশালাইজড কোম্পানী কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রবিবার রাত আনুমানিক আড়াইটায় র্যাব-১ স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন বাশাইর সাকিনস্থ ধৃত আসামী দীপ্ত দাস এর বাড়ীতে এসএসসি পরীক্ষা ২০২০ এর ভূয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের কতিপয় সদস্য অবস্থান করছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ মাহবুব আলম ও দীপ্ত দাস কে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, পলাশ শিল্পাঞ্চল সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এছাড়াও তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্র/ছাত্রীদের প্রাইভেট/টিউশন পড়ায়। ছাত্র/ছাত্রীদের প্রাইভেট/টিউশনি পড়ানোর আড়ালে বিগত ২০১৮ সালে ফেসবুক আইডির মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করে। তারা ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বিভিন্ন ছাত্র/ছাত্রীদের সাথে মেসেজের মাধ্যমে প্রলোভন দেখালে অনেক সুযোগ সন্ধানী ছাত্র/ছাত্রীরা তার সাথে যোগাযোগ পূর্বক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জার, ইমো ও হোয়াটস্অ্যাপ এর মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট অবৈধভাবে ভূয়া প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে সুযোগ সন্ধানী ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তাদের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করার পরে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্র গুলো সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমো থেকে ডিলেট করে দিত।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, ফেসবুকে তাদের দেয়া পোষ্ট দেখে অনেক সুযোগ সন্ধানী শিক্ষার্থীরা প্রলোভনে পড়ে প্রশ্ন পাওয়ার আশায় বিকাশের মাধ্যমে তাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রেরণ করত। এক্ষেত্রে গ্রেফতারকৃতদের’র ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমো এর বিভিন্ন লিংক/গ্রুপ হতে প্রাপ্ত প্রশ্নপত্র সরবরাহ করত। আবার কখনো পূর্বের বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কাটছাট করে, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে নিজেই প্রশ্নপত্র তৈরি করে সরবরাহ করত। এভাবে পাবলিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী পরীক্ষা প্রশ্নপত্র সরবরাহ করে ধৃত আসামীরা বিভিন্ন শিক্ষার্থী/চাকুরীজীবিদের নিকট হতে বিকাশ ও বিভিন্ন পন্থায় মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করছে বলে জানা যায়। ধৃত আসামীদের দেওয়া তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাইয়ের ভিত্তিতে এই চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।