গণবাণী ডট কম:
ঢাকায় পৃথক তিনটি জানাযার নামাজ অনুষ্ঠানের পর গাজীপুরে মঙ্গলবার সকালে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রহমত আলীর প্রথম জানাযার নামাজ শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
এর আগে রবিবার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রহমত আলীর প্রথম জানাজা বাদ আছর ধানমন্ডি শংকর জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকাল ৪টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে তার তৃতীয় জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
গাজীপুর মহানগরীর শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জানাযার নামাজে মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও দোয়া চেয়ে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, গাজীপুর ৩ শ্রীপুর আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আক্তারুজ্জামান, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্জ এ্যাডভোকেট মো: জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো: আনোয়ার হোসেন, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মো: আমানত হোসেন খান, এ্যাডভোকেট রহমত আলীর ছেলে জামিল হাসান দুর্জয়সহ আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। এসময় গাজীপুরের পুলিশ সুপার সামসুন্নাহারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, কয়েকটি বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ভিসি, সাবেক সচিবসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিপুল সংখ্যক মুসুল্লী উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশের একটি চৌকস দল এ্যাডভোকেট রহমত আলীর মরদেহ জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
জানাযার নামাজ শেষে এ্যাডভোকেট রহমত আলীর মরদেহে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন, প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিটের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এরপর মরহুমের চতুর্থ জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজ মাঠে সকাল সাড়ে ১১ টায়। পঞ্চম ও শেষ জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বিকাল ৩টায় শ্রীপুরে মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজ মাঠে। বর্ষিয়ান জননেতা রহমত আলীর মরদেহ শ্রীপুর পৌর শহরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত রবিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রহমত আলীর কফিনে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক এই সাংসদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় পতাকায় মোড়া কফিনে পুষ্পাঞ্জলী অর্পণের পর মরহুমের প্রতি সম্মান জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে দলের জেষ্ঠ্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে আরেকটি শ্রদ্ধাঞ্জলি মরহুমের কফিনে অর্পণ করেন।
এরআগে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মরহুমের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করেন।পরে পাশাপাশি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়াসহ চিফ হইপ এবং হুইপবৃন্দ মরহুমের কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পক্ষে জাতীয় পার্টির হুইপ পীর ফজলুর রহমানও শ্রদ্ধা জানান।
এরআগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ ও হুইপবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামণা করে বিশেষ মোনাজাতও অনুষ্ঠিত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীকে এ সময় গার্ড অব অনারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়।