গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) সকালে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে। এসময় তাকে অত্যন্ত বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।
কারাগারের জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান জানান, সোমবার (১৬ মার্চ) গভীর রাতে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানাটি কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছে। পরে মঙ্গলবার সকালে তাকে পড়ে শোনানো হয়। জেল সুপার আরো জানান, আইনগত লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, নিয়ম অনুযায়ী এখন তিনি ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন করতে পারবেন। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে এই আবেদন না করলে যেকোনো দিন রায় কার্যকর হতে পারে। তবে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করে দণ্ড পরিবর্তন হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এর আগে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সব যুদ্ধাপরাধী রিভিউ আবেদন করেও রায় বদলাতে পারেনি।
রিভিউ আবেদন খারিজ হলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজহারুল ইসলামকে রাষ্ট্রপতির কাছে অপরাধ স্বীকার করে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে হবে। তিনি যদি প্রাণ ভিক্ষা না চান এবং চেয়েও যদি ক্ষমা না পান তাহলে রায় কার্যকরের ক্ষণগণনা শুরু হবে। রায় কার্যকরের আগে তিনি শেষবারের মতো পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওসহ নানা অপরাধে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাবেক এ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন। জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলকে একই সঙ্গে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে তিনি ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। গত বছরের ৩১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ আজহারুল ইসলামের আপিল আবেদন খারিজ করে দেন। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল থাকে। গত ১৫ মার্চ রবিবার এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগে বহালের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।