গণবাণী ডট কম:
বিভিন্ন মহলের আপত্তি উপেক্ষা করে করোনায় সৃষ্ট ক্রান্তিকালের মধ্যেই শনিবার অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনে উপ-নির্বাচনে ভোট গ্রহণের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা সংক্রমনের আশঙ্কা ও ভোটার উপস্থিতির খড়ার মধ্যে তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীগণ বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন। শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলে।
বিজয়ীরা হলেন, ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো: শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ১৫ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো: শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন নির্বাচিত হয়েছেন। নভেল করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম পেয়েছেন ৮১৭ ভোট।
এছাড়া অপর প্রার্থীদের মধ্যে জাতীয় পার্টির হাজী মো. শাহজাহান পেয়েছেন ৯৭ ভোট, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপির কাজী মুহাম্মদ আব্দুর রহিম পেয়েছেন ৬৩ ভোট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী পেয়েছেন ১৫ ভোট এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. মিজানুর রহমান পেয়েছেন ১৮ ভোট।
শনিবার রাতে ঢাকা টিচার ট্রেনিং কলেজের ফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্রে এই ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কমকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়া ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের ছেড়ে দেওয়া এই আসনে ৩ লাখ ২১ হাজার ২৭৫ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৬ হাজার ৯৬৫ জন। ভোটের হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
১৩২টি ভোট কেন্দ্রে ফলাফলে অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি (নৌকা) পেয়েছেন ২ লাখ ১৪ হাজার ৪৮২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি দলীয় প্রার্থী গাইবান্ধা জেলা বিএনপি সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মইনুল হাসান সাদিক পেয়েছেন ৪১ হাজার ৪০৮ ভোট।
গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমানের নিকট থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে এই তথ্য জানা যায়। তিনি আরও জানান, একটি পৌরসভা ও ১৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩৫ হাজার ২১১ জন।
প্রসঙ্গত, এ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত আ’লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকার ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর মারা যাওয়ায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন নির্বাচিত হয়েছেন। শনিবার (২১ মার্চ) রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭০টি কেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে। ফলাফলে নৌকার প্রার্থী পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৫৩৫ ভোট। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রি পেয়েছেন মাত্র এক হাজার ৬২৫ ভোট। এসব কেন্দ্রগুলোতে ৬৬৮ ভোট বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুস আলী।
জানা যায়, দুই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ১৪৩টি কেন্দ্রে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৫১০ জন ভোটার ছিল। এরমধ্যে এক লাখ ৫৮ হাজার ৭৯১ জন পুরুষ ও এক লাখ ৫৭ হাজার ৭১৯ জন নারী ভোটার।
গত ১০ জানুয়ারি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাগেরহাট-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়।