গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের দোতলা বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী ও তাদের তিন সন্তানকে গলাকেটে হত্যার ঘটনার রহস্য উম্মোচিত হতে শুরু করেছে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম, জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও একাধিক টিম, ঢাকার ক্রাইম সিন ইউনিট ও সিআইডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ উদ্ধার ও সুরতহাল করার সময় মা ও দুই মেয়ে অর্ধনগ্ন ছিল এবং প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পেয়েছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম জানান, গেল বুধবার রাতে খাবারের পরে মধ্যরাতে বা যে কোন সময় এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে। নিহতদের শরীর দেখে বুঝা যাচ্ছে যে, হত্যার পূর্বে মা ও মেয়েদেরকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ থেকে এ লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া
মানুষ যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে শংকিত তখন এ নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড সকলকে হতবাক করে দিয়েছে। খবর পেয়ে গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহান ছাড়াও ঘটনাস্থলে গেছেন গাজীপুর-৩ শ্রীপুর আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ।
নিহতরা হলো : প্রবাসী মো: কাজল মিয়ার স্ত্রী স্মৃতি আক্তার ওরফে ফাতেমা (৪৫)। বড় মেয়ে নুরা আক্তার (১৬)। সে বাড়ীর পাশের হাজী আবদুল কাদের একাডেমির দশম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট মেয়ে শাওরিন আক্তার (১২)। সেও বাড়ীর পাশের ব্রাইট স্কলার ক্যাডেট মাদ্রাসার ছষ্ঠ শ্র্রেণির ছাত্রী।আর সবার ছোট ছেলে ফাদিল আল সাদ (৭)। সে প্রতিবন্ধী ও আবদুল করিম একাডেমির নার্সারি ক্লাসের শিক্ষার্থী ছিল। কাজলের জন্মস্থান ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার মশাখালি ইউনিয়নের নেউকা গ্রামের তালুকদার বাড়ি।
কাজল প্রায় ২০ বছর ধরে মালয়েশিয়া থাকেন। সেখানে থাকার সময় ইন্দোনেশিয়ান মেয়ে ফাতেমাকে বিয়ে করেন।ওখানেই তাঁদের বড় মেয়ের জন্ম হয়। পরে শ্রীপুরের আবদার গ্রামের জমি ক্রয় করে দোতলা বাড়ি তৈরী করেন। দেশে আসলে আরো এক মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হয়। তার স্ত্রী সন্তানেরা এ বাড়ীর দ্বিতীয় তলায় বসবাস করছিল। কাজল সময় করে ছুটিতে বাড়ি আসেন।
প্রতিবেশীদের সাথে এ পরিবারের খুবই ভালো সম্পর্ক। সকলেই তাদের খুবই ভাল মানুষ হিসাবে জানেন।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রাসেল শেখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি মনে করেন ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড। হত্যার সময় হয়তো অন্যকিছু ঘটে থাকতে পারে। হত্যাকারীদের মূল্য উদ্দেশ্য ছিল হত্যা করা। ঘটনাস্থল থেকে ধারালো ছুড়ি, বটি ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।