গণবাণী ডট কম:
জাতীয় অধ্যাপক ও খ্যাতিমান প্রকৌশলী, সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী রাজধানী ঢাকার এ্যালিফেন্ট রোডের বাসায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে —- রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
জানা যায়, সোমবার রাত ২টার দিকে ঘুমের মধ্যে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয়। এরপর ভোর ৪টার দিকে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হলেও ততক্ষণে তিনি মারা গেছেন বলে জানা যায়।
জামিলুর রেজা চৌধুরীর ভাগ্নি শেনিন জিয়াউদ্দিনকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার রাতে অধ্যাপক চৌধুরী ঘুমাচ্ছিলেন, কিন্তু পরিবারের সদস্যরা ডাকলে দীর্ঘ সময় তিনি সাড়া দেননি। এরপর পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে এক পর্যায়ে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ১৯৪২ সালের ১৫ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তদানীন্তন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বা এখনকার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে তিনি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি বুয়েটে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জামিলুর রেজা চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ। তিনি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য ছিলেন। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। তিনি তার কাজের স্বীকৃতি হিসাবে একুশে পদক লাভ করেছেন।
পেশাগত দায়িত্বের বাইরে তিনি আর্থকোয়েক সোসাইটি, পরিবেশ আন্দোলন বাপা এবং গণিত অলিম্পিয়াডের মত বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন দায়িত্ব যেমন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনের সফটওয়্যার রফতানি এবং আইটি সার্ভিস রপ্তানি-সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি টাস্কফোর্সের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি পদ্মাসেতু প্রকল্পে পরামর্শক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী যত বড় বড় অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে, প্রতিটির সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে।
আজ বাদ জোহর রাজধানীর ধানমন্ডির ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।