গণবাণী ডট কম:
রাজধানী ঢাকার পল্লবী থানার ভেতরে বিস্ফোরণের ঘটনায় চার জন পুলিশসহ মোট পাঁচ জন আহত হয়েছেন। বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ পল্লবী থানার ভেতরে এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে দুইজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- পরিদর্শক ইমরান, উপ পরিদর্শক (এসআই) সজিব, পিএসআই অংকুর, পিএসআই রোমিও এবং রিয়াজ। এর মধ্যে রোমিও এবং রিয়াজকে ঢামেকে ভর্তি করা হয়েছে।
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ভোরে পল্লবীর কালশী কবরস্থান এলাকায় একটি অভিযানে বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সেটি নিস্ক্রিয় করতে গেলে অসাবধানতাবশত বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এক পরিদর্শকসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।
ডিএমিপির ডিসি মিডিয়া ওয়ালিদ হোসেন বলেন, পল্লবী থানা পুলিশ দু’টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিন জন সন্ত্রাসীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সন্ত্রাসীদের কাছে ওজন মাপার মেশিনের মতো একটা যন্ত্র ছিল। ওই যন্ত্রটি ডিউটি অফিসারের কক্ষে রাখা হলে তা বিস্ফোরিত হয়।
তিনি আরও জানান, আটক হওয়া সন্ত্রাসীরা ভাড়াটে খুনি। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল তারা পল্লবীর স্থানীয় একজন রাজনৈতিক নেতাকে হত্যা করবে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় যে একটি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এপ্লোসিভ ডিভাইস)-এর বিস্ফোরণ ঘটার ফলে সেখানে পুলিশ সদস্যদের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে, পরে পুলিশ জানায়, সেখানে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। পরবর্তীতে সেখানে থাকা আরও দু’টি বোমার নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার ওয়ালিদ হোসেন উদ্ধৃত করে বিবিসি বাংলা জানায়, ”গোপন সূত্রের খবরে গতকাল তিনজন ভাড়াটে খুনিকে গ্রেপ্তার করেছিল পল্লবী থানার পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দুইটি পিস্তল আর জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়, তার মধ্যে ওয়েট মেশিনের (ওজন পরিমাপ করার যন্ত্র) মতো দেখতে একটি বস্তু ছিল।”
”আজ সকাল সাতটার দিকে সেই ওয়েট মেশিনের মতো বস্তুটির বিস্ফোরণ ঘটলে চার জন পুলিশ সদস্য ও একজন সাধারণ নাগরিক আহত হয়। তাদের মধ্যে ওসি তদন্ত, একজন এসআই ও দুইজন পিএসআই রয়েছেন।” কীভাবে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো, সেটা নিয়ে তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ওয়েট মেশিনের ভেতর বোমা স্থাপন করে রাখা হয়েছিল। তবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, পল্লবী থানায় কোন আইইডি’র বিস্ফোরণ ঘটেনি, তবে সেখানে অপরাধীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা যে বিস্ফোরক ছিল, তার বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশ সদস্যদের আহত হওয়া ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, এটি কোন জঙ্গি তৎপরতা নয় বলেই তারা মনে করছেন।
মি. রায় নিশ্চিত করেছেন যে থানার মধ্যে একটি ছোট বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এই ঘটনার পর পুলিশের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা পল্লবী থানায় এসে তদন্ত শুরু করেছেন।
ঘটনাস্থল থেকে একজন সাংবাদিক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সকাল ১১টার দিকে থানার ভেতরের একটি কক্ষে আরও দুইটি বোমার নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
সম্প্রতি দেশ জুড়ে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। সেখানে পুলিশকে টার্গেট করে বা পুলিশ স্থাপনায় হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
শনিবার পল্টন এলাকা থেকে একটি বোমা সদৃশ বস্তু উদ্ধার করা হয়। তার আগের দিন শুক্রবার পল্টনে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। সূত্র : বিবিসি ও অন্যান্য।