গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি‘র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে তার পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করেছে। বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ধানমণ্ডির গিয়ে সাক্ষাৎ করে এই লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।
শামীম ইস্কান্দার বলেছেন, ডাক্তাররা তার বোন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেয়ার পর তারা সরকারের কাছে এই আবেদন করেছেন।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই আবেদনটিকে সরকার ইতিবাচকভাবেই দেখছে। এর আইনগত দিক পরীক্ষা করে দেখার জন্য আবেদনপত্রটি ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোভাবও ইতিবাচক।
এবিষয়ে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর ঢাকায় বেসরকারি এভার কেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়ে তিন বছর আগে কারাগারে থাকাকালীন গত বছর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়।
গত বছরের ২৫ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তির পর তিনি গুলশানে তার বাসায়ই ছিলেন। সেখানেই গত ১১ এপ্রিল করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ২৭ এপ্রিল রাতে পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরায় এভার কেয়ার হাসপাতালে নিলে সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত সোমবার তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়।
বিএনপি নেতাদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, গেল বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় এভার কেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুপারিশ করে।
এরপরই পরিবারের সদস্যরা একমত হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে লিখিত আবেদন করেন।
‘পজিটিভলি’ দেখছে সরকার :
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার আবেদনটি তারা ‘পজিটিভলি’ দেখছেন। “প্রধানমন্ত্রী এসমস্ত বিষয়ে অত্যন্ত উদার এবং আমরা পজেটিভলি দেখার চেষ্টা করব অবশ্যই। পজিটিভলি দেখছি বলেই তাকে (খালেদা জিয়া) দণ্ডাদেশ স্থগিত করে চিকিৎসার সুবিধা আমরা করে দিয়েছি। যাতে উন্নত চিকিৎসা পায়, তার পছন্দমতো।”
খালেদা জিয়াকে তার পরিবার কোন দেশে নিতে চাইছে-জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা পত্রটা খুব কেয়ারফুলি দেখতে পারিনি। আসার পরই প্রসেস করতে পাঠিয়ে দিয়েছি।”
তবে, গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে তার পরিবার চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিতে চান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, “দেখুন, এখানে অনেক কিছু জড়িত আছে। বিদেশে যেতে হলে আবার কোর্টের কোনো (কিছু) লাগবে কি না? সেটাও তো ব্যাপার আছে। সেজন্যই আইনমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তার কমেন্টস আসুক।” বৃহস্পতিবারের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে কয়েকটি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, আইনমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হলে আদালতের নয়, অনুমতি লাগবে সরকারের।