নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ২০০৮ সালে পারিবরীক কলহের জের ধরে ১৩ মাস বয়সী শিশুকে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যার দায়ে এক নারীকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার (০২ আগস্ট) বেলা তিনটার দিকে দীর্ঘ ১৬ বছর পর গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মোঃ আব্দুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ওই আসামিকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণাকালে একমাত্র আসামি ফাতেমা খাতুন পলাতক ছিলেন।
গাজীপুর আদালতের অতিরিক্ত পিপি মোঃ আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শিশুর নাম মিথিলা ময়েজ (১৩ মাস)। সে কাপাসিয়া উপজেলার বড়চালা গ্রামের দুবাই প্রবাসী ময়েজ উদ্দিনের কন্যা।
দন্ডিত নারীর নাম ফাতেমা খাতুন (৩৬)। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার বড়চালা গ্রামের মনির উদ্দিনের মেয়ে। ফাতেমা খাতুন সম্পর্কে শিশু মিথিলা ফয়েজের চাচাতো ফুফু।
অতিরিক্ত পিপি মোঃ আতাউর রহমান বলেন, ২০০৭ সালে ১৬ জুলাই নিহত শিশু মিথিলা ময়েজের মা মোসাঃ নেলী বেগম ভাগিনী শান্তার কাছে মিথিলা ময়েজকে রেখে কেনাকাটা করার জন্য রাণীগঞ্জ বাজারে যায়। বিকেলে তার চাচাত ননদ ফাতেমা খাতুন তার ভাগনী ফারজানা (৪) নিয়ে নেলী বেগমের বাড়িতে এসে শান্তা ও মিথিলা ময়েজকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে কাপাসিয়া বাজারে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাওনাট গ্রামে সরকার বাড়ি পুকুরের কাছে এসে শান্তার কোলে থাকা মিথিলা ময়েজসহ ধাক্কা দিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। পরে শান্তার ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের পানি থেকে উঠায়।
এদিনে ফাতেমা খাতুন রাতে মিথিলা, শান্তা ও ফারজানাকেসহ তার দূর সম্পর্কের আত্মীয় নয়ন মিয়ার বাড়িতে রাত যাপন করে। রাতের কোন এক সময়ে ফাতেমা খাতুন শিশু মেয়ে মিথিলা ময়েজকে ঘুম থেকে উঠিয়ে রাওনাট গ্রামস্থ সরকার বাড়ির পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়। পরে ১৭ জুলাই মিথিলা ময়েজকে মৃত অবস্থায় পুকুরের পানি থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহত ওই শিশুর মা মোসাঃ নেলী বেগম বাদি হয়ে ওই বছরের ১৭ জুলাই কাপাসিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাপাসিয়া থানার এসআই একে আজাদ একমাত্র আসামি ফাতেমা খাতুনকে অভিযুক্ত করে ২০০৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানীর পর ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১৬ বছর পর বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। ঘটনার পর থেকে আসামি ফাতেমা খাতুন পলাতক রয়েছে।