গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশির কথা বলে চালক ও যাত্রীকে হাত পা বেধে সিএনজি ছিনতাই ঘটনায় জড়িত দুই ছিনকতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতদের একজন মঙ্গলবার আদালতে স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্ধি দিয়েছে।
গ্রেফতার আসামিরা হলো মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার খানকা দালালপাড়ার মৃত-কামাল হোসেনের ছেলে মোঃ সমরাট ওরফে সম্রাট (৩৩)। প্রথমে তাকে গত ২৪ জুলাই দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন সিপাহীপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করার পরদিন বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
অপর আসামী ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানার কইখালি বাজার এলাকার মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে আল আমিন (২৪)। তাকে গত ৩১ জুলাই রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন নবীনগর এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিগ্যাসাবাদে সে ঘটনা স্বীকার করে গত ১ আগস্ট বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দিয়েছে।
বুধবার বিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিপিএম।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ মামলার বাদী মোঃ কামরুল ইসলাম (৪৪) পিতা-মোঃ আছব আলী, সাং- পাইকুড়া, থানা- কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোনা, এ/পি সাং- শিলমুন ঝগিবাড়ী, থানা- টঙ্গী পূর্ব, জিএমপি গাজীপুর
তিনি আরো জানান, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার পাইকুড়া এলাকার মোঃ আছব আলীর ছেলে মোঃ কামরুল ইসলাম (৪৪) গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর শিলমুন এলাকায় ভাড়া থাকেন। তিনি গত ১৩ এপ্রিল রাতে জানতে পারেন তার ভাই আঃ হেকিম সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এ খবর পেয়ে তাকে দেখার জন্য ভাড়া বাসা হতে তার অপর চাচাতো ভাই মোঃ হাসেম (৪৭) কে সাথে নিয়ে নিজের সিএনজি (নং গাজীপুর-থ-১২-১১৮৬) যোগে গ্রামের বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথে রাত সাড়ে ৪টার দিকে পূবাইল থানাধীন হায়দ্রাবাদ সাকিনস্থ আক্কাছ মার্কেটের নিকট তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছা মাত্রই পূর্ব থেতে ওৎপেতে থাকা একটি হাইস গাড়ী হতে চারজন লোক নেমে তার সিএনজি থামানোর জন্য সিগন্যাল দেয়। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে সিএনজি তল্লাশি করার কথা বলে কামরুল ও হাসেম সিএনজি থেকে নেমে দাড়ায়। পরে অজ্ঞাতনামা লোকজন তাদের হাত, পা ও মুখ স্কচটেপ দিয়ে বেধে হাইস গাড়ীতে তুলে তাদের সাথে থাকা নগদ ৭২ হাজার ও সিএনজি নিয়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় পরবর্তীতে বাদী ও তার ভাইকে হায়দ্রাবাদ ছাবের মার্কেট ভাঙ্গা ব্রীজের পাশের্^ বালির মধ্যে ফেলে রেখে আসামিরা পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় মোঃ কামরুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
তিনি আরো জানান, পূবাইল থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে কোন কিনারা করতে না পারায় ছিনতাইকৃত সিএনজি উদ্ধারসহ ঘটনার মূলরহস্য উদঘাটনের জন্য মামলাটি পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তা আসামীদে গ্রেফতার করা করা হয়। আসামিগণ পেশাদার ছিনতাইকারী। তাদের নামে ইতোপূর্বেও বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি আল আমিন (২৪) কে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১ আগস্ট বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।