মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সেকশন

 

কালিয়াকৈরে স্ত্রীকে স্বাসরোধ হত্যার ২ মাস পর স্বামী গ্রেফতার

Asad
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৩

---

গণবাণী ডট কম:

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পারিবারীক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে স্বাসরোধে করে হত্যা ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে পাষন্ড স্বামী। ২ মাস পর পাওয়া ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে জানা গেল স্ত্রীকে স্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনার ২ মাস পাষন্ড স্বামীকে ঢাকার আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১। গ্রেফতারের পর স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করেছে স্বামী।

নিহত গৃহ বধূর নাম হাফিজা আক্তার (২৮)। তিনি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক এলাকার মোঃ হাসেম সিকদারের মেয়ে।

গ্রেফতার আসামীর নাম মাসুদ রানা (৪৬)। তিনি জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার টুপকারচর এলাকার মৃত অহেজ উদ্দিনের ছেলে। মাসুদ স্ত্রী হাফিজাকে নিয়ে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন কামরাঙ্গাচালা সাকিনস্থ জনৈক সেলিম এর বাড়ীতে ভাড়া থাকতো।

রোববার (২৭ আগস্ট) সকালে এসব তথ্য জানান, র‌্যাব-১, গাজীপুরের স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ ইয়াসির আরাফাত হোসেন, বিপিএম (সেবা)।

গত ২৮ জুন কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক এলাকা থেকে মাসুদের ভাড়া বাড়ি থেকে ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় হাফিজা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তিনি আরো জানান, প্রায় ৫ বছর আগে নিজের মাসুদ তার প্রথম বিয়ের কথা গোপন করে হাফিজা আক্তারকে পারিবারীকভাবে বিয়ে করেন। মাসুদের প্রথম সংসারে দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর নাম বুলবুলি আক্তার। তিনি মাসুদের জামালপুরের বাড়ীতে থাকেন। বিয়ের পর মাসুদের প্রথম বিয়ের কথা হাফিজা আক্তার জানতে পারলে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। এ নিয়ে প্রায় তাদের মধ্যে সময় ঝগড়া হতো। গত ২৭ জুন তাদের মধ্যে পুনরায় ঝগড়া হলে মাসুদ তার অপর ৩/৪ জন সহযোগীদের নিয়ে হাফিজা আক্তারকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মাসুদ সহযোগীদের নিয়ে হাফিজার মরদেহ তারই ওড়না দিয়ে গলায় প্যাচিয়ে ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেন।

তিনি আরো জানান, পরদিন ২৮ জুন সকালে মাসুদ তার শ্যালক সাব্বিরকে ফোন করে জানায়, হাফিজা অসুস্থ, দ্রুত মাসুদের ভাড়া বাসায় এসে যেন বোনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে সাব্বির মাসুদের ভাড়া বাসায় গিয়ে তার বোনকে ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় হাফিজার পিতা মোঃ হাসেম সিকদার কালিয়াকৈর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। তিনি আরো জানান, পরবর্তীতে ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে জানা যায়, হাফিজাকে শারীরিকভাবে আঘাত করতঃ শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরে পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে মোঃ হাসেম সিকদার বাদী হয়ে হাফিজার স্বামী মাসুদ রানাসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করে গত ২৫ জুলাই কালিয়াকৈর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরে পর আসামী মাসুদ রানা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে।

র‌্যাবের ঐ কর্মকর্তা আরো জানান, র‌্যাব-১, এর একটি আভিযানিক দল ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই অংশ হিসাবে গত ২৬ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে তথ্য পাওয়া যায়, প্রধান আসামী মাসুদ রানাকে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন কোন্ডলবাগ এলাকায় একটি বাসায় আত্মগোপনে আছে। পরে র‌্যাব-১, গাজীপুরের স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মোঃ ইয়াসির আরাফাত হোসেন ও স্কোয়াড কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রতন কুমার দাশগুপ্তের নেতৃত্বে সেখানে অভিযান চালিয়ে মাসুদ রানাকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী মাসুদ রানা তার ২য় স্ত্রী হাফিজা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় বলে স্বীকার করে এবং এই হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়।

তিনি আরও জানান, মাসুদের নামে অপহরণ চাঁদাবাজি , প্রতারণা ও দ্রুত বিচার আইনে আগেও তিনটি মামলা রয়েছে।

মন্তব্য

পঠিতসর্বশেষ

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon