গণবাণী ডট কম:
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। ইমরান খানকে ক্ষমতার গদি থেকে নামাতে উঠে পড়ে লেগেছে বিরোধী দলগুলো। আঁটছে একের পর এক প্ল্যান। শেষমেষ বৃহস্পতিবার পাকিস্তান জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ সব মহাসড়ক অবরোধ করে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করার ‘প্ল্যান বি’ পদক্ষেপ গ্রহণ করে তারা। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের কঠোর এই পরিকল্পনাও নস্যাৎ করে দিতে আপাতত সক্ষম হয়েছে ইমরান সরকার। খবর রয়টার্সের।
২৭ অক্টোবর করাচিতে সর্বপ্রথম ইমরান খানের পতনের জন্য বিক্ষোভের ডাক দেন রক্ষণশীল জামায়াত উলমা ই ইসলাম পার্টির নেতা ফজল-উর-রেহমান। তার অভিযোগ, ইমরান খান ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রীই দায়ী। পাকিস্তানের দক্ষিণের এই শহর থেকে তার ডাকে ‘আজাদী মার্চ’ শুরু করে সরকার বিরোধীরা। ৩১ অক্টোবর নিজের হাজার হাজার সমর্থক নিয়ে রাজধানী ইসলামাবাদে পা রাখেন ফজল-উর-রেহমান। প্রায় দু-সপ্তাহ ধরে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো অচল করে রাখে বিক্ষোভকারীরা। এরপরই নতুন পরিকল্পনা আঁটেন জামায়াত উলমা ই ইসলাম প্রধান, যাকে তিনি নাম দেন ‘প্ল্যান বি’। তিনি নিজের সমর্থকদের অদৃশ্য হয়ে গিয়ে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। তার পরিকল্পনা ছিল, বুধবার পাকিস্তান জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো অবরোধ করে ফেলা।
বৃহস্পতিবার শত শত বিক্ষোভকারী ইসলামাবাদ ও আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের মধ্যেকার সংযোগ সড়ক গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড অবরোধ করে ফেলে। ফলে, বড় ধরনের যানজটের সৃষ্টি হয় আন্তর্জাতিক এই মহাসড়কে। তাদের মধ্যে একজন মুফতি ওয়াসিস আজিজ ঘোষনা করেন, ‘আমাদের নেতা পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত আমরা সরবো না।’
জেকবাবাদেও সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও পাঞ্জাবের মধ্যেকার সংযোগ মহাসড়কটিতেও একই ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান পুলিশের একজন মুখপাত্র। কিন্তু সড়ক কর্তৃপক্ষ এদিন অন্যান্য পথ দিয়ে ট্রাফিক ঘুড়িয়ে দিলে বিক্ষোভকারীদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়।
ফাওয়াদ চৌধুরী নামে ইমরানের মন্ত্রীসভার একজন মন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামাবাদ অবরোধ ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে। এ বিক্ষোভের ফলে দেশের ধর্মকেন্দ্রিক রাজনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্থ করলো তারা।’
সরকার বিরোধীদের দাবি, ইমরান খানের সরকার সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র বিষয়গুলো তাদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়। পক্ষান্তরে, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিরোধীদের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও ক্ষমতায় অবিচল থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।