গণবাণী ডট কম:
করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় জালিয়াতি করার অভিযোগে আটক জেকেজি হেলথকেয়ারের সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে আবারো রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।
এ সময় তেজগাঁও থানার প্রতারণা মামলায় আবারও তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে ডিবি। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে তা নাকচ করে দেন বিচারক।
তার আইনজীবী বলেছেন, সাবরিনা চৌধুরী জেকেজির চেয়ারম্যান এমন কোন আইনগত ডকুমেন্ট নেই। “আইনগতভাবে সে ওই কোম্পানির কেউ না। সে কারণে এ মামলায় সে আসতে পারে না। আর কোন নির্দিষ্ট অপরাধের ওপর ভিত্তি করে এফআইআর হয়নি। তাই কোন ভাবেই রিমান্ডে হতে পারে না। তারপরেও আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।”
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ বলেছেন, এ মামলাটি স্পর্শকাতর ও আলোচিত মামলা। দেশে-বিদেশে মানুষ তাকিয়ে আছে। “সে কারণে আমরা বলেছি রিমান্ড হলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব হবে। আরও কোন প্রতিষ্ঠান এ ধরণের করোনা জালিয়াতিতে জড়িত থাকলে তাদেরও চিহ্নিত করা যাবে।”
এর আগে ১৩ই জুলাই সাবরিনাকে আদালতে উপস্থাপন করে চার দিনের রিমান্ড চেয়েছিল পুলিশ। তবে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল।
গত ১২ই জুলাই সাবরিনা চৌধুরীকে পুলিশের কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে আটক করা হয়।
কী অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে?
স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন সহয় জেকেজি করোনাভাইরাসে নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করেছিল।
ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক হওয়ার পরও জোবেদা খাতুন হেলথকেয়ার (জেকেজি) প্রকল্পে নিয়ম না মেনে চেয়ারম্যান থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ প্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি করোনার ভুয়া সনদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ পুলিশের।
নমুনা দাতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রিপোর্ট দেয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলো তারা। যদিও সরকাররে সাথে চুক্তিতে এ পরীক্ষা বিনামূল্যে করার কথা ছিল। পরে অভিযোগ ওঠে যে জেকেজি টাকা নিয়েও ভুয়া রিপোর্ট দিচ্ছিলো নমুনা দাতাদের।
আটকের দিনই তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার অনুমোদন থাকলেও পরীক্ষা না করে ভুয়া ফলাফল দেয়ার অভিযোগে ২৩শে জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ডা. সাবরিনাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। রবিবার (১২ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত এক অফিস আদেশ জারি করা হয়।